ঝিনাইদহে ফার্নিচার মেলায় বখাটেদের উৎপাত : গার্লস স্কুলের ক্লাস ও কোচিং বন্ধ

ডাকবাংলা প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন জেলখানা এলাকায় অবৈধভাবে বসানো ফার্নিচার মেলার কারণে ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কোচিং ও ক্লাস দুটোই বন্ধ হয়ে গেছে। নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীদের অভিভাবকরা মেলায় বখাটেদের অত্যাচারের কারণে তাদের সন্তানদের আর ক্লাস ও কোচিঙে পাঠাচ্ছেন না।

ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আফরোজা হক জানান, স্কুলের কিছু ক্লাস ও বেশির ভাগ কোচিং পুরাতন জেলখানার ভবনে করা হয়। কিন্তু মেয়েদের যাওয়ার পথে ফার্নিচার মেলা বসানোর কারণে বখাটেদের উৎপাতে নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীরা আর কোচিং করতে রাজি হচ্ছে না। ফলে পুরানো জেলখানা ভবনে চলা কোচিং ও ক্লাস এক সপ্তা ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে অভিভাকবরা চরম ক্ষুব্ধ কিন্তু; তিনি প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়ে তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। অভিভাবকরা বিষয়টি নিয়ে চরাম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

ঝিনাইদহ নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মাসুম আলী বেগ জানান, আয়োজক কর্তৃপক্ষ মেলার জন্য কোনো অনুমতি নেয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে মেলা চালানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিলে তিনি আজই মেলা উচ্ছেদ করবেন বলে জানান। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, মেলার আয়োজকদের ইতোমধ্যে মেলা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মেলা উঠছে না দেখবেন।

এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রশাসনকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এ অবৈধ মেলা চালানো হচ্ছে। মেলায় আগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি হাত জায়গা ৬শ টাকা করে ভাড়া নেয়া হয়েছে। সেই হিসেবে মেলায় প্রায় ৮০টি দোনাক থেকে প্রায় ২৫/২০ লাখ টাকা আদায় হলেও এক টাকাও সরকারি কোষাগারে জমা পড়েনি। অথচ সরকারি জায়গা ভাড়া দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬’র অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার ফয়সাল আহম্মেদ জানান, মেলা উচ্ছেদের জন্য একটি সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান, পুলিশ সুপার সহায়তা চাইলে তিনি সহায়তা করতে প্রস্তুত আছেন। তিনি মেলায় ইভটিজারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান। কিন্তু এ অবৈধ মেলার প্রতি ঝিনাইদহ পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের দুর্বলতা ও উচ্ছেদ নিয়ে টালবাহানার কী কারণ থাকতে পারে তা নিয়ে জেলাব্যাপি ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।