ঝিনাইদহে তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

 

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে পুলিশ কনস্টেবল হত্যা, সরকারি অফিসে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় এক ওসিসহ ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন- হরিণাকুণ্ডু থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম (বর্তমানে মাগুরা সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা), এসআই আমিনুল ইসলাম (বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর থানায় কর্মরত) এবং এসআই নাসির উদ্দিন (বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলায় কর্মরত)।

ইতোমধ্যে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। গতবৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২০১৩ সালের ৩ মার্চের এ ঘটনায় একই সালের ২০ নভেম্বর বিভাগীয় মামলাটি দায়ের করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দফতর থেকে কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সোহেল রেজা, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার (ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার), কোটচাঁদপুর সার্কেল এএসপি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তারা অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন। ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা পরিদর্শক মিজানুর রহমান মামলার সার্বিক সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।

সূত্র মতে, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় জামায়াতসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর কয়েক হাজার নেতাকর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা উপজেলা পরিষদে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। উপজেলা পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা, মৎস্য, এজি অফিস, স্থানীয় সরকার বিভাগ, উপজেলা অডিটরিয়ামসহ বিভিন্ন দফতরে হামলা চালান এবং আগুন ধরিয়ে দেন তারা। পুলিশের কাছ থেকে একটি শর্টগান ও ৫ রাউন্ড গুলি ছিনতাই করে নিয়ে যান তারা। পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, ঘটনার দিন হরিণাকুণ্ডুর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম, এসআই আমিনুল ইসলাম এবং এসআই নাসির উদ্দিন দায়িত্বরত ছিলেন। এরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বিক্ষুব্ধ জামায়াত কর্মীদের প্রতিহত করেন না। অভিযোগ করা হয়েছে, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল বশারও নীরব ভূমিকা পালন করেন। একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক জীবনবাজি রেখে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। চারদিক থেকে জামায়াত সমর্থকরা তাকে ঘিরে ফেলেন এবং অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনেই নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় তাকে।

একটি সূত্র জানায়, ঘটনার পরপরই পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক হত্যার অভিযোগে ৬ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। চলতি সালের মে মাসে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার হুসাইনকে প্রধান আসামি করে ২২০ জনের নাম লিখে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। এ মামলায় নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে কয়েক কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।