ঝিনাইদহে জালিয়াতির মাধ্যমে হুন্ডি কাজলের জমি বিক্রি তদন্তে নেমেছে নিবন্ধন অধিদফতর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে কোটচাঁদপুরের হুন্ডি কাজলের গায়েবি উপস্থিতি দেখিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে তার জমি রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে নিবন্ধন অধিদফতর বাংলাদেশ। অধিদফতরের ১/১৫১১৪ স্মারকে পাঠানো চিঠির আলোকে ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল মালেক সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে আজ বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত থাকতে বলেছেন। ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে ইস্যু করা ৩৭২/১(৯) ও ৩৭৩/১(১০) স্মারকের চিঠিতে বলা হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ‘রেজিস্ট্রি অফিসে গায়েবি উপস্থিতি, হুন্ডি কাজলের জমি অবৈধভাবে বিক্রি’ অভিযোগ বিষয়ে এক তদন্ত জেলা রেজিস্ট্রারের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। সে মতে ১৬ অক্টোবর কোটচাঁদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে লিখিত/মৌখিক বক্তব্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। চিঠিতে কোটচাঁদপুর সাব রেজিস্ট্রার অঞ্জনা রানী, জমি বিক্রেতা ফারুক আহম্মেদ হুন্ডি কাজল, জমি ক্রেতা বলাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মিজানুর রহমান খান, একই গ্রামের শাহরিয়ার সাবিরের স্ত্রী মেহেরিন আক্তার, সলেমানপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী উম্মে তাছলিমা আজাদ, দলিলের সাক্ষী কোটচাঁদপুরের রাজাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নাজমুল, নওদা গ্রামের রজব আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান, দলিলের সনাক্তকারী পাশপাতিলা গ্রামের আনসার আলীর ছেলে মিজানুর রহমান ও দলিল লেখক মল্লিকপুর গ্রামের বছির উদ্দীনের ছেলে বদর উদ্দীনকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল মালেক তদন্তের কথা স্বীকার করে জানান, আমরা চাই তদন্ত হয়ে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসুক। তিনি বলেন, দলিল বাতিলের ক্ষমতা তো আমাদের নেই। সেটা আদালত দেখবে। আমরা তদন্ত করে নিবন্ধন অধিদফতরকে জানাবো।
উল্লেখ্য, হুন্ডি কাজল ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারী ১৫৯ ও ১৬০ নং দলিলে তার জমি বিক্রি করেন। কিন্তু তিনি একাধিক মামলায় আদালত থেকে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বহু আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তিনি এখন ভারতে অবস্থান করছেন। এ ধরণের একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যাকে হাজার হাজার লগ্নিকারী প্রতিনিয়ত খোঁজ করছেন সেই বহুল পরিচিত ব্যক্তি পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোটচাঁদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে শত শত মানুষের সামনে কোনোভাবেই জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেন না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) থেকে ৩৭৮০ নং স্মারকে বিষয়টি অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কোটচাঁদপুর থানার ওসি মাহবুবুল আলমকে নির্দেশ দেন। কিন্তু ওসি মাহবুবুল আলম তদন্ত হিমাগারে ফেলে রেখে দুই মাস অতিবাহিত করেছেন। এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দিয়ে ওসি কালক্ষেপন করছেন বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে কোটচাঁদপুরের ওসি মাহবুবুল আলম বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ব্যাস্ত থাকায় রিপোর্ট দিতে পারিনি। এলাকাবাসী এই মহা জালিয়াতির রহস্য উদঘাটনে দ্রুত পুলিশের বিষেশ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামানের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।