ঝিনাইদহে জাতীয় পার্টির পকেট কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি

 

ঝিনাইদহ অফিস: পল্লিবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির ঝিনাইদহ জেলা শাখার পকেট কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন দলটির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এ পকেট কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জেলা জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে অনৈক্য, চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তারা সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করতে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার শহরের চান্দা কমিউনিটি সেন্টারে আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিল মাহফিলে আয়োজন করে জাতীয় যুব সংহতি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি ও জাতীয় ছাত্রসমাজের নেতাকর্মীরা।

ইফতার মাহফিল ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম। জাতীয় যুব সংহতি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূর উদ্দীন আহমেদ, জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম আশরাফ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মাজমাদার, সাবেক যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্মআহ্বায়ক আজিজুর রহমান অটো, জেলা যুবসংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ কবীর, তৌহিদুজ্জামান বাচ্চু, জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় যুগ্মসাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহমেদ সোহাগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ পল্টন, সহসভাপতি শ্রী অরবিন্দু বিশ্বাস, পৌর জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি রাকিব হাসান মুন্না, যুব নেতা কবীর উদ্দীন ও পৌর যুব সংহতির আহ্বায়ক হাফিজ উদ্দীন। সভার শুরুতেই এরশাদ ও রওশন এরশাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। এছাড়া নেতাকর্মীরা সৃজনীর চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির নেতা হারুনের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ এনে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।

সভায় বক্তারা বলেন, ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির পকেট কমিটিতে অধিকাংশ ত্যাগী নেতাকর্মী বাদ পড়েছেন। বক্তারা অতি দ্রুত এ কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে পল্লিবন্ধু এরশাদ ও রওশন এরশাদের হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। সৃজনী এনজিও কর্মীদের নিয়ে ঝিনাইদহে হারুন জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার চেষ্টা করছেন বলে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন। হারুনের পকেট কমিটি সম্পর্কে দলের জেলা, উপজেলা পর্যায়ের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কিছুই জানেন না। বিনা সম্মেলনের মাধ্যমে করা এই কমিটিতে দলটির জেলা পর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী বাদ পড়েছেন। জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি হারুন অর রশীদ গোপনীয়ভাবে কেন্দ্র থেকে পকেট এই কমিটি অনুমোদন করেছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের মিশ্রিত লোক দিয়ে কমিটি গঠন করে জাতীয় পার্টির মান সম্মান ক্ষুণ্ণ করার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।

নেতাকর্মীরা বলেন, এই পকেট কমিটির দলের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ণ করছে। জেলা জাতীয় পার্টির এ কমিটির কারণে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস, বৈরিতা ও বিরোধিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন কমিটির নেতাদের রাজনীতির কোনো অতীত ভূমিকা ও পদচারণা না থাকায় এ কমিটি প্রত্যাখান করেছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা আরও বলেন, দলের জেলা সভাপতি হারুন অর রশীদের বিতর্কিত ভূমিকায় ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে প্রকাশ্যে গ্রুপিং ও কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। এনজিও কর্মীদের দিয়ে তিনি জেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতি করছেন। দলীয় কার্যালয় বাদ দিয়ে তিনি সৃজনী বাংলাদেশের অফিসকে দলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন।