ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে একক প্রার্থী নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে বিএনপি-জামায়াত : আওয়ামী লীগে বিদ্রোহ

ঝিনাইদহ অফিস: বাউল সম্রাট লালন শাহ এবং তার গুরু সিরাজ সাঁই, সাধক পাঞ্জু শাহ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা বাঘাযতীনের জন্মস্থান ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ মার্চ। এ উপজেলার নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত জোটগতভাবে একক প্রার্থী দিলেও তিন প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর তৃণমূল নেতাকর্মী ও ভোটারদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ আমেজ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অংশ নেয়ার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে উপজেলা বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে। যার ফলে দলীয়ভাবে দিয়েছেন একক প্রার্থী। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী তারা। আজ বৃহস্পতিবার এ উপজেলার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৪ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৬২টি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক চাঁদপুর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. এমএ মজিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক উপজেলা পরিষদের বর্তমান অস্থায়ী চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম টানু মল্লিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক আফজাল হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাও. আকরাম হোসেন প্রার্থী হয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াত জোটগতভাবে অ্যাড. এমএ মজিদকে প্রার্থী দিলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এখনও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জামায়াত নেতা রেজাউল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শিলু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিরুজ্জামান পলাশ। বিএনপি ও জামায়াত জোটগতভাবে রেজাউল ইসলামকে ও আওয়ামী লীগ শহিদুল ইসলামকে শিলুকে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে আমিরুজ্জামান পলাশ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী মাহমুদা সুলতানা কেয়া, বিএনপি সমর্থিত সেলিনা খাতুন, জামায়াত সমর্থিত ফাতেমা বেগম ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নাসিমা আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-জামায়াত জোটগতভাবে প্রার্থী দিলেও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দু দলেরই প্রার্থী রয়েছে।

এদিকে প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রার্থীরা পুরোদমে শুরু করেছেন প্রচারণা। ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি। পাড়া-মহল্লায়, হাট-বাজার ও সড়কের মোড়ের চা স্টলগুলো নির্বাচনী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভোটাররা হিসাব মিলাতে পারছে না। সকলের একই প্রশ্ন কে হবেন হরিণাকুণ্ডুর চতুর্থ উপজেলা চেয়ারম্যান?

সর্বশেষ ২০০৯ সালের নির্বাচনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জামায়াত নেতা মোতাহার হোসেন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। পুলিশ কনস্টেবল ওমর ফারুক হত্যা মামলায় বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।