ঝিনাইদহের লিপু হত্যা রহস্য মোবাইলে হুমকি ও কথা কাটাকাটি : হত্যার বিচার চাইলেন পরিবার

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু সর্বশেষ বাড়ি আসে গত পূজোর ছুটিতে। লিপু হত্যা রহস্য ফাঁস না হলেও ক্যাম্পাসে ফেরার আগের দিন সোমবারে লিপুর সাথে মোবাইলফোনে হুমকি-ধামকি ও কথা কাটাকাটি হয়েছিলো বলে লিপুর পরিবার থেকে জানা গেছে। মোতালেব হোসেন লিপুকে দাফনের পর এলাকায় ও লিপুর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বুক ফাটানো কান্না থামানো যাচ্ছে না লিপুর হতভাগী মা হোসনেয়ারা বেগম ও স্বজনদের।

একেবারেই নরম ও ভদ্র স্বভাবের ছিলেন রাবি’র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ঝিনাইদহের মোতালেব হোসেন লিপু। বাড়িতে কম কথা বলতেন, ছিলেন অনেকটা চাপা স্বভাবের। সে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সাছে জড়িত ছিলো না। পড়া-লেখাই ছিলো তার একমাত্র কাজ। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুরক্ষিত স্থানে থেকেও লাশ হয়ে ঘরে ফেরা কোনোভাবেই মানতে পারছেন না তার পরিবার ও এলাকাবাসী। নিজেরা মামলা না করলেও বলছেন সরকার এর বিচার করুক। লিপুকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে এমন আশঙ্কা পরিবারের।

চাচাত ভাই শাসুম মোল্লা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু সর্বশেষ বাড়ি আসে গত পূজোর ছুটিতে। মঙ্গলবারে সে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। কেন সে লাশ হলো, কেন তাকে বাঁচতে দেয়া হলো না, কারা ছিলো তার ঘাতক এমন প্রশ্ন সবার মাঝে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সহকর্মীদের ফোন আর টিভির খবর দেখে লিপুর পরিবার জানতে পারে তাদের ছেলে খুন হয়েছে, লাশ পড়ে আছে ক্যাম্পাসের ডাইনিঙের ড্রেনে। ঝিনাইদহের প্রত্যান্ত পল্লি হরিনাকুণ্ডুর মকিমপুর গ্রামে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নেমে আসে শোকের ছায়া।

লিপুর পিতা বদর উদ্দিন জানান, ২ ভাই এক বোনের মধ্যে লিপু ছিলো বড়। শুক্রবার গভীর রাতেই নিহত লিপুর মরদেহ গ্রামের বাড়ি মকিমপুরে আনার পর দাফন সম্পন্ন হয়। লিপুর মা হোসনেয়ারা জানান, অনেক স্বপ্ন-সাধনায় থাকা ছেলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে এমন মৃত্যু খবরে নির্বাক। কী বলবেন তারা, কী করনীয় কিছুই গুছিয়ে বলতে পারলেন না তবে ক্ষীণকন্ঠে বিচার চাইলেন সরকারের কাছে। বললেন ছেলে দোষি কি নির্দোষি তা সরকারের কাছেই জানতে চাই।

লিপুর মা আরও বলেন, ক্যাম্পাসে ফেরার আগের দিন মোবাইলে হুমকি ও কথাকাটাকাটি হয়েছিলো, আমি ঘটনা জানতে চাইলে লিপু বলে কোনো ব্যাপর না আমার রুমমেটের সাথে ফোনে কথা হচ্ছিলো। আমি লিপুর রুমমেটের মোবাইল নম্বর জানতে চাইলে লিপু একটু চুপ করে থেকে বলল, এবার ক্যাম্পাস থেকে ঘুরে এসে দিবো। পরিশেষে লিপুর পরিবার বিচার চাইলেন সরকারের কাছে।