ঝিনাইদহের বাজার গোপালপুর ক্যাম্প পুলিশের বিরুদ্ধে ৬ জনকে আটকের পর দুজনকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহ সদর-কোটচাঁদপুর উপজেলার সীমান্তে চিত্রা নদীর ধারে চিহ্নিত কয়েকটি স্থানে প্রায় প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মাদকের জমজমাট আড্ডা চলছে। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নির্বিঘেœ চিহ্নিত কয়েকজন মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রীতিমত সারুটিয়া গ্রামের এনা নামের জনৈক ব্যক্তি বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মাদকের বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে যুবসমাজসহ মাদকসেবীরা হাত বাড়ালেই খুব সহজেই মাদক পেয়ে এসকল আড্ডা দিচ্ছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসন দু-একজনকে গ্রেফতার করলেও বারবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে মাদককারবারি ও সেবনের মূল হুতারা। গতপরশু বৃহস্পতিবার বিকেলে বাজার গোপালপুর পুলিশ ক্যাম্প ওয়াড়িয়া গ্রামের চিত্রানদীর ধারে অভিযান চালিয়ে ৬ জন গাঁজাসেবনকারিকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ উঠেছে দুজনকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তবে সদর থানা তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তদন্তে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর ক্যাম্প পুলিশ ওয়াড়িয়া গ্রামের চিত্রা নদীর পাশে অভিযান চালায়। এ সময় ৬ জন গাঁজা সেবনকারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ ক্যাম্পে আনেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের ওয়াড়িয়া গ্রামের বোরহান উদ্দিন (৩০), ফজলুর রহমান ফেলা (৩০), আসলাম উদ্দিন (৪২) এবং কোটচাঁদপুর উপজেলার দৌড়া ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের রফিজ (৩৬), একই ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামের সাইদুর রহমান (৩০) ও আলাউল হককে (৪৫) গ্রেফতার করে বাজার গোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আনা হয়। এরপরই শুরু হয় তাদেরকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য দেনদরবার। চলতে থাকে রাত পর্যন্ত। ফলাফল প্রায় পূর্বের মতই সাইদুর ও আসলাম নামের দুজনকে ছেড়ে দিয়ে রাতেই ৪ জনকে বাজার গোপালপুর পুলিশ ক্যাম্প ঝিনাইদহ সদর থানায় প্রেরণ করেছে। অভিযোগ উঠেছে ৬জন গাঁজাসেবনকারিকে গ্রেফতার করলেও দুজন গাঁজাসেবনকারিকে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর বাকিরা দ্রুত অর্থ প্রদান করতে পারে না। এতে বিষয়টি নিয়ে পুলিশে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট জানাজানি হয়ে গেলে রাতেই তাদেরকে সদর থানায় প্রেরণ করতে বাধ্য হয় ক্যাম্প পুলিশ। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ৪ জনকে গাঁজাসেবনের অভিযোগে থানায় প্রেরণ করা হয়েছে। তবে ৬ জনকে গ্রেফতার করে দুজনকে ছেড়ে দিয়ে ৪জনকে থানায় পাঠানোর বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রশাসনের পাশাপাশি পারিবারিকভাবে সচেতন সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে মাদকের ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করা সহজ হবে।