ঝিনাইদহের ছেলে রাবির ছাত্র লিপুর লাশ উদ্ধার

 

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা হত্যাকাণ্ড : সহপাঠী দুজন আটক 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ হরিণাকুণ্ডুর ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু লাশ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাবির নবাব আব্দুল লতিফ হলের ডাইনিঙের পাশের ড্রেন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে ঝিনাইদ হরিণাকুণ্ডুর কিমপুর গ্রামের বদর উদ্দিনের ছেলে। গতকালই মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক বলেছেন, মাথায় বড় ধরনের আঘাতের কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে বিকাল ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ডা. এনামুল হক এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, লিপুর মাথায় ডান পাশে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। আর বুকের দুপাশে দুটো হাড় ভেঙে গেছে। শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুলিশ বলেছে, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলেই ধরে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলাম ও প্রদীপ নামের দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার হরিনাকুণ্ডু থানার মকিমপুর গ্রামের বদর উদ্দিনের ছেলে লিপু ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে প্রথমবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ন্যূনতম ক্রেডিট না পাওয়ায় তাকে পুনরায় দ্বিতীয় বর্ষে থাকতে হয়। আগামী ২ নভেম্বর লিপুর দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন লিপু। তার এক সহপাঠী শহিদুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে তার সাথে আমার কথা হয়। তখন সে আমার কাছে পরীক্ষার নোট-পত্রের খোঁজখবর করছিলো। পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলো। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে ৩টার দিকে লিপুর লাশ বিভাগের শিক্ষকদের নিকট হন্তান্তর করা হয়েছে। বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লাশ তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে নেয়া হয়। এদিকে তার বাড়িতে মাতা-পিতাসহ নিকটজনদের আহাজারিতে গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গতরাতেই বেদনাবিধুর পরিবেশে দাফন সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া করা হয়। রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার একরামুল হক বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এছাড়াও ঘটনাস্থল ও লিপুর কক্ষ থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষা করে দেখা হবে।

লিপুর রুমমেট রাজিবুল ইসলাম রাজিব বলেন, লিপু কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে জড়িত ছিলেন না। রাত ১২টার দিকে ও ঘুমানোর জন্য রুমে আসে। আমিও তখন শুয়ে পড়েছি। গভীর রাতে একবার দরজা খোলার শব্দ পেয়েছিলাম। কিন্তু খেয়াল করিনি। রাজিব আরো জানান, লিপু প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম করতে বের হতেন। কিন্তু যখন তার লাশ পাওয়া গেলো, তখন গায়ে কোনো কাপড় ছিলো না।