ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইসলামী ব্যাংকের গার্ডকে হত্যা করে ৭২ লাখ টাকা লুটের রহস্য উৎঘাটিত

ঝিনাইদহ অফিস: ভাড়াটিয়া সেজে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের ইসলামী ব্যাংকের গার্ড সাবেক সেনা সদস্য আইয়ূব হোসেনকে (৪৮) হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ মিজানুর রহমান নামে ওই ভবনের এক ভাড়াটিয়াকে খুঁজছে। এদিকে গার্ডকে হত্যা করে ৭২ লাখ ৪১ হাজার ৮শ টাকা লুটের ঘটনায় মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৪/৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় এ মামলা মামলা দায়ের করেন।

ইতোমধ্যে র‌্যাব ও পুলিশ ঘাতকচক্রকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। নিহত গার্ড আইয়ূব হোসেনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার সকালে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত হোসেন জানান, কালীগঞ্জের জহুরা প্লাজার দ্বিতীয় তলায় ইসলামী ব্যাংক আর তৃতীয় তলায় বিসমিল্লাহ কনজ্যুমারস নামে একটি এনজিও ছিলো। বাড়ির মালিক ইমদাদুল হক ইসলামী ব্যাংকের সাথে তৃতীয় তলার ভাড়া চুক্তিনামা করার পরও পুনরায় বিসমিল্লা কনজুমারর্সের কাছে ভাড়া দেন। এ ঘটনার সাথে ভবনের মালিক জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশের সন্দেহ। ওসি আরো জানান, বিসমিল্লাহ কনজ্যুমারস বাংলাদেশ লিমিটেডের কথিত মালিক মিজানুর রহমান, ৩২ মনেশ্বর রোড, হাজারীবাগ, ঢাকা পরিচয় দিয়ে মালিক এমদাদের কাছ থেকে মাসে ১৬ হাজার টাকায় ঘরটি ভাড়া নেন। ভাড়া নেয়ার পর থেকেই কথিত মিজানুর রহমান তৃতীয় তলায় যাওয়া আসা করতো এবং ইসলামী ব্যাংকের গার্ড আইয়ূব হোসেনের ভাগ্নে রবিউল ইসলামকে তার সংস্থায় চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলে। বৃহস্পতিবার অফিস বন্ধ থাকার পরও কথিত মিজানুর রহমান রাত ৯টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় ৪/৫ জনকে সাথে নিয়ে ডিউটিরত গার্ড আইয়ূব হোসেনকে ডেকে নিয়ে ব্যাংকের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন নিচতলায় এটিএম বুথের গার্ড ইব্রাহিম। এরপর রাতের কোনো এক সময় আইয়ূব হোসেনকে হত্যা করে ব্যাংকের ভোল্টে থাকা ৭২ লাখ  ৪১ হাজার ৮শ টাকা লুট করে পালিয়ে যায় তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইরাদুল হক জানান, কথিত মিজানুর রহমান ও তার সঙ্গীরা আইয়ূব হোসনকে প্রাণ জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে তার মাথা থেতলে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে আলামত পাওয়া গেছে। ঘাতকরা টাকা লুট করার সময় ব্যাংকে প্রতিটি সিসি ক্যামেরা ও একটি কম্পিউটার নিয়ে গেছে। এ ঘটনার পর পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ও র‌্যাব খুলনার ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।