জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ আজ

স্টাফ রিপোর্টার: লোকে তাকে কিং ডিক বলে সম্মোধন করতো। তা রাজাই ছিলেন বটে রিচার্ড জন সেডন। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন প্রধানমন্ত্রীত্ব করা জন সেডন ব্যক্তিত্বে এবং প্রশাসনিক কর্তৃত্বে নিজেকে এক রাজায় পরিণত করেছিলেন। সেই রিচার্ড জন সেডনের নামে নামকরণ হয়েছে হ্যামিলটনের সেডন পার্ক ওভাল মাঠের। এখানে দল হিসেবেও একসময় কিং ছিলো নিউজিল্যান্ড; এ মাঠ থেকে খালি হাতে ফিরতো না তারা। সেই কিং সেডনও নেই, সেই নিউজিল্যান্ডের দাপটও নেই। সেডন পার্কে এখন নিউজিল্যান্ডের পরাজয়টা নিয়মিত দৃশ্য। আজ সেই দৃশ্যটা কিউইদের আরেকবার উপহার দিতে চায় বাংলাদেশ।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টানা সাত ম্যাচে জয়, বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই জয়; জয়ের এ অসাধারণ ধারাবাহিকতা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে আজ স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ দল। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটায় শুরু হয়ে যাওয়ার কথা গ্রুপপর্বে দু দলের এ শেষ লড়াই।

কাগজে-কলমে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ খুব একটা তাত্পর্য বহন করে না। দু দলই ইতোমধ্যে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখে ফেলায় এ ম্যাচের ওপর কারো ভাগ্য নির্ভর করছে না। বাংলাদেশের একটু পাওয়ার আছে। এ ম্যাচ জিতলে গ্রুপের চার নম্বর থেকে এক ধাপ এগিয়ে তিন নম্বরে চলে যাবে তারা। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এ ম্যাচের আসল গুরুত্বটা অন্য জায়গায়। এটা আসলে বাংলাদেশের জয়যাত্রা ধরে রাখার একটা চ্যালেঞ্জ।

এই জয়যাত্রাটা দু অর্থে। প্রথমত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের একটা অবিরাম জয়যাত্রা চলছে সেই ২০১০ সাল থেকে। সে বছর পাঁচ ম্যাচ সিরিজ খেলতে এসে চার ম্যাচ হেরে ফিরেছিলো নিউজিল্যান্ড; একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিলো। পরে ২০১৩ সালে আবার বাংলাদেশ সফরে এসে হোয়াইট ওয়াশ হয় নিউজিল্যান্ড। সবমিলিয়ে টানা সাত ম্যাচ হারের স্মৃতি নিয়ে নিউজিল্যান্ড এই ম্যাচটা খেলতে নামবে।

এ সাত জয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের চলমান বিশ্বকাপের জয়যাত্রা ধরে রাখারও ব্যাপার আছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আজকের আগ পর্যন্ত খেলেছে পাঁচটি ম্যাচ। এর একটি মাত্র ম্যাচে হারের মুখ দেখতে হয়েছে মাশরাফিদের। স্কটল্যান্ড, আফগানিস্তানের পাশাপাশি হারিয়েছে তারা ইংল্যান্ডকেও। ফলে এই জয়রথে চ্যালেঞ্জও আছে।

জাতীয় দলের কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে বলছেন, তারা এই জয়রথ এগিয়ে নিতে প্রস্তুত। এ শ্রীলঙ্কান কোচ পরিষ্কার বলেছেন, তাদের মূলমন্ত্রই হলো, কাউকে ভয় না পাওয়া। আর সেটা করতে পারলে আজও জয় দেখছেন তিনি। আমরা কখনোই ভয় পাইনি যে, আমরা ব্যর্থ হতে পারি। বলতে পারেন, আমাদের এবারের কী-ওয়ার্ড হলো- আমরা ভয় পাই না। আমার ধারণা, নিকট অতীতে অনেকবার আমরা ব্যর্থতার ভয়ে স্থবির হয়ে গেছি, আমরা শেষ চাপটা নিতে পারিনি। বিশ্বকাপের আগে এ নিয়ে আমরা অনেক কথা বলেছি। আমাদের খেলোয়াড়দের মাঠে যা খুশি করার স্বাধীনতা আছে। আমরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস করি। শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নয়, প্রতিটি ম্যাচে এটাই ছিল আমাদের মূলমন্ত্র। স্কটল্যান্ড তিনশ পার করে ফেলেছে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা তিনশ করতে পারিনি; কখনোই আমরা হারের ভয় পাইনি। আজও আমরা নির্ভয়েই খেলবো।

খেলার চেতনা আগের মতো থাকলেও এই ম্যাচে একাদশে কিছু পরিবর্তন সম্ভবত আসছে। সাধারণত দলগুলো উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে না চাইলেও আজ হয়তো কিছু বদল বাংলাদেশকে আনতেই হবে। প্রথমত পায়ের ও গলার ব্যথায় ভুগতে থাকা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা হয়তো আজ খেলতে পারবেন না। তার বদলে অধিনায়কত্ব করতে হবে সাকিব আল হাসানকে। আর মাশরাফির বদলে একাদশে ঢুকতে পারেন পেসার সফিউল ইসলাম।

আজ দলে জায়গা করে নিতে পারেন নাসির হোসেন। আর হ্যামিলটনের প্রথাগত স্পিন সহায়তার কথা মাথায় রেখে তাইজুল ইসলামকেও যোগ করা হতে পারে একাদশে।