জ্বলছে গাজা

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গাজায়ইসরাইলি হামলায় মানবতা আজ ভূলুণ্ঠিত। রক্তের নেশায় মত্ত ইসরাইলি সেনাদেরহামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না জাতিসংঘ আশ্রয় শিবির। নারী-শিশু ও বৃদ্ধদেরতারা নির্বিচারে হত্যা করছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতরেরদিনেও তাদের হামলা বন্ধ থাকেনি। নরকপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। এরপও ইসরাইলিপ্রধানমন্ত্রী হুঙ্কার দিয়েছেন হামাসের তৈরি সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস না হওয়াপর্যন্ত হামলা চলবে। সংরক্ষিত সেনাবহর থেকে আরও ১৬ হাজার সেনা মোতায়েনেরওঘোষণা দিয়েছে দেশটি। ওই সেনা যোগ হলে মোট সদস্য দাঁড়াবে ৮৬ হাজারে।ইসরাইলের দোসর যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ উদ্বাস্তু শিবিরে হামলা নিন্দা করলেওকোনো দেশের নাম উল্লেখ করেনি। এমনকি তারা এ হামলার পরও ইসরাইলিঅস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। জাতিসংঘের নিন্দাওইসরাইলিদের কানে পৌঁছায় না। বৃহস্পতিবারও গাজায় ইসরাইলি হামলায় ১০ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে তাদের হামলার ২৪তম দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়েদাঁড়িয়েছে ১৩৭৪ জনে। ফিলিস্তিনের মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন গাজায় হামলাচালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইলের মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিভাগ।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবারনতুন হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, হামাসের তৈরি সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস না করা পর্যন্তইসরাইল গাজায় অভিযান চালিয়ে যাবে। নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতি থাক বা নাথাক ইসরাইল সব সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর।জাতিসংঘের স্কুলে ও বাজারেহামলার পর যুদ্ধে অটল থাকার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, তেল আবিবেতারা রকেট হামলা চালিয়ে যাবে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, তেল আবিবে খোলা একটি জায়গায় বুধবার হামাস ৮১টি রকেট হামলা চালিয়েছে।গাজারফিলিস্তিনিরা বুধবার আরেকটি রক্তঝরা দিন কাটিয়েছে। জাতিসংঘের স্কুল ওজনাকীর্ণ বাজারে ইসরাইলি হামলার ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ ওযুক্তরাষ্ট্র এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তবে নিন্দা জানালেও হোয়াইট হাউসেরবিবৃতিতে হামলাকারী হিসেবে ইসরাইলের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

নিন্দাজানানোর কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইসরাইলের গোলাবারুদের মজুদ ওসরবরাহ ঠিক রাখতে তাদের কাছে নতুন করে অস্ত্র বিক্রি করা হবে। স্কুলেরশরণার্থী শিবিরে ওই হামলায় ১৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। ওই স্কুলেহামলার পরপরই নিকটবর্তী একটি বাজারে আরেকটি ইসরাইলি হামলায় ১৭ জন নিহতহয়েছেন। কোস্টারিকা সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন গাজার জাতিসংঘ স্কুলেহামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এই হামলার জবাবদিহিতা ও বিচার হওয়া দরকার বলেক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। স্কুলে হামলাকে অগ্রহণযোগ্য ও নীতিবিরুদ্ধ বলেনিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, জাতিসংঘের একটি স্কুলেঅগ্রহণযোগ্য হামলা চালানো হয়েছে। স্কুলটিতে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি আশ্রয়নিয়েছিলেন।ইসরাইলের ওই বর্বরোচিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সতর্ক ভাষায়মন্তব্য করেছে হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় জাতিসংঘের স্কুলে ইসরাইলের গোলাবর্ষণের নিন্দাজানাচ্ছে। ওই হামলায় শিশু ও জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মীসহ নিরপরাধফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদআব্বাস বান কি মুনের কাছে লেখা এক চিঠিতে ফিলিস্তিনিদের জীবন রক্ষায়প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বানজানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও সন্ত্রাসী অভিযানেরমাধ্যমে গণহত্যার অভিযোগ এনেছেন। গাজার জাতিসংঘের স্কুলে আশ্রয় নেয়া মঈনআল-আতামনা বলেন, তারা (ইসরাইল) বাড়িঘর ও স্কুলসহ সব জায়গায় বোমা হামলাচালাচ্ছে। গাজার কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেনহার্পার বুধবার গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনার জন্য হামাসকেদায়ী করেছেন।ইসরাইলি হামলায় নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক মানুষ বলেজানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।