জীবননগর মোক্তারপুরে শিক্ষকের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ- একই পরিবারের ৪ জনসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখম

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার মোক্তারপুরে শিক্ষকদের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় মাংস কাটা ডাসা দিয়ে কুপিয়ে একই পরিবারের ৪ জনকে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। এ সময় এক গৃহবধূসহ অন্য ৩ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়ার সময় অন্য আর একজন শিক্ষকের নেতৃত্বে রাস্তার মধ্যে আহতদের আটক করে দ্বিতীয় দফায় বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ করা হয়েছে। স্কুলের পুরাতন টেবিল-চেয়ার ও দরজা চুরি করাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মোক্তারপুর গ্রামের মৃত ফুল চাঁদ ম-লের ছেলে বাজারের মুদি ও সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী আহত মাহবুব হোসেন মিলু অভিযোগ করে বলেন, একই গ্রামের ফজলুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে মামুন কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। গত বছর রমজান মাসে গভীর রাতে তিনি স্কুলের পুরাতন কিছু টেবিল-চেয়ার ও দরজা চুরি করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। বাজারের ওপর দিয়ে যাওয়াকালে একটি দরজা পড়ে গেলে বিকট শব্দে বাজারের দোকানে ঘুমিয়ে থাকা ব্যবসায়ীরা জেগে ওঠেন এবং বাহিরে বেরিয়ে প্রধান শিক্ষক মামুনের স্কুলের মালামাল বাড়িতে সরিয়ে নেয়ার দৃশ্য দেখেন। ব্যবসায়ীরা এ সময় প্রতিবাদও করেন। দীর্ঘ ১ বছর পর শুক্রবার রাতে ব্যবসায়ী মিলুকে প্রধান শিক্ষক মামুন জিজ্ঞাসা করেন তাকে চোর বলা হচ্ছে কেন?। উত্তরে মিলু জানায়, স্কুলের আসবাপত্র চুরি করেছিলেন; তাই সকলে আপনাকে চোর বলছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মামুন তার ভাই ফারুক হোসেন, আফছার আলীর ছেলে মিঠু ও রাজু এবং সিরাজুল ইসরামের ছেলে সাইবুলকে সাথে নিয়ে হামলা চালিয়ে মাংস কাটা ডাসা দিয়ে কুপিয়ে মিলু ও তার দুই ভাই শহিদুল ইসলাম, মশিয়ার রহমান এবং ভাতিজা রাজাকে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় মিলুর তাসকিন ট্রেডার্সে হামলা চালিয়ে ক্যাশ বাক্স ভেঙে টাকা ও মালামাল লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে মিলুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার বৃদ্ধ মাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় রাস্তার মধ্যে একই গ্রুপের অপর শিক্ষক মৃত আবু তালেবের ছেলে হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে আহতদের আটক করে দ্বিতয়ী দফায় পেটানো হয়। এ সময় তারা হামলা চালিয়ে চায়ের দোকানে বসে থাকা আব্দুল আজিজের ছেলে জহিরুল ইসলাম বুদো ও আহত মিলুর ভাগ্নে কলম হোসেনের স্ত্রী রুমি খাতুনকেও পিটিয়ে আহত করে। মারপিটকালে ওহিদুল ইসলাম নামে অপর আরও একজন আহত হয়। আহত সকলকে উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে রাতেই এসআই সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও হাসপাতালে ভর্তি আহতদের নিকট হামলার ঘটনা শোনেন। আহত শহিদুল ইসলাম জানান, তাদের সাথে শিক্ষক মামুনের সাথে বিরোধ বাধলেও শিক্ষক হাবিবুর রহমান তা গায়ে পেতে নিয়ে পরবর্তীতে তাদেরকে মারপিট করে ও হাসপাতালে আসতে বাধা সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, শিক্ষক হাবিবুরের কর্মকা-েতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন। এ ঘটনার পর সে গ্রামটিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ফলে গ্রামটিতে বর্তমানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহত শহিদুল ইসলাম আরও জানান, এ ঘটনায় তিনি থানাতে মামলা দায়েরের জন্য একটি অভিযোগ দিয়েছেন।