জীবননগর ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মশিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে একই সাথে মাদরাসায় শিক্ষাকতা করার অভিযোগ

 

জীবননগর ব্যুরো: সরকারি নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করে একই ব্যক্তি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদালপুরের এক মাদরাসার শিক্ষক মশিয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে জীবননগর ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত রয়েছেন। একই ব্যক্তি একই সাথে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চরমভাবে উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর ডিএস আলিম মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক পদে হিসাবে মশিয়ার রহমান ২০০৪ সালের ১ জুন যোগদান করেন। সপ্তম গ্রেডের বেতন স্কেল অনুযায়ী ২০১০৫৭১ ইনডেক্সধারী ওই শিক্ষক ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর রুপালী ব্যাংক শাখার টি-৫৯৩ নং হিসাবের মাধ্যমে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। মাদরাসায় চাকরিরত অবস্থায় ২০১৩ সালের ৭ মার্চ তিনি জীবননগর ডিগ্রি কলেজের বিএম শাখায় ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। একই ব্যক্তি দুটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকায় উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে মশিয়ার রহমান সপ্তায় একদিন জীবননগর ডিগ্রি কলেজে যান এবং শিক্ষক হাজিরা খাতায় পুরো সপ্তার স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে কলেজের একজন সহকারী অধ্যাপক জানান, মশিউর রহমান অন্যের সহযোগিতায় এখানে চাকরি করে যাচ্ছেন। একই সাথে তার দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরির কারণে বিশেষ করে জীবননগর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জীবননগর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দীন জানান, মশিয়ার রহমান অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কি-না জানি না। তার চাকরি এমপিওভুক্ত না হওয়ার কারণে যাচাইবাছাই করা হয়নি। এমপিওভুক্ত হওয়ার পূর্বে যাচাই-বাছাই করা হবে। অপরদিকে সাবদালপুর ডিএস আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ জাকির হোসাইন জানান, মশিয়ার রহমান মাদরাসায় নিয়মিত পাঠদান করেন। তবে অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন কি-না আমার জানা নেই।

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ২০১০ সালের ২৮ নভেম্বর জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কোনো শিক্ষক/কর্মচারী একই সাথে দুটি প্রতিষ্ঠানে (এমপিওভুক্ত/ননএমপিওভুক্ত) যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষক/কর্মচারী একই সাথে দু প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা না নিলে উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ দায়ী থাকবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজ জানান, একই ব্যক্তি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা আইন বহির্ভূত। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।