জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বস্তিতে আ.লীগ-জামায়াত

 

কোন্দলে বিপর্যস্ত বিএনপি : লড়াই হবে ত্রিমুখি

স্টাফ রিপোর্টার: জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণসংযোগ এবং প্রচারণায় অবিরাম ছুটছেন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। উপজেলাজুড়ে দুপুর থেকে রাত অবধি চলছে মাইকিং। প্রার্থীদের পোস্টার ও লিফলেটে ছেয়ে গেছে উপজেলার সর্বত্র। প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায়। চাইছেন ভোট এবং দোয়া। প্রতিটি এলাকায় তারা নির্বাচনী কমিটি করেছেন। এবার নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে প্রার্থীদের সহধর্মিণীদের গণসংযোগে অংশ নেয়া। বিশেষ করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রায় সবার সহধর্মিণীই স্বামীর পক্ষে প্রচারণায় দিন-রাত ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত রয়েছেন। নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে প্রতিটি গ্রাম-পাড়া-মহল্লা। ফলে উপজেলার সর্বত্র এখন নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। তবে ভোটাররা নানান হিসাব-নিকাশ কষছেন। কার দ্বারা উপজেলাবাসীর উন্নয়ন হবে তাকে বেছে নেবেন ভোটাররা।

উপজেলা নির্বাচন অফিসসূত্রে গেছে, এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্য ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৯ হাজার ১৯৪ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা ৫৯ হাজার ৩৬৪ জন। আগামী ২৩ মার্চ জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত। কিন্তু বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশ সত্ত্বেও চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি। বিএনপিতে দু প্রার্থী সক্রিয় থাকায় বিরোধের আগুনে পুড়ছে তারা। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারনে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে দলটির সাংগঠনিক শক্তি দূর্বল হয়ে পড়েছে। দুটি গ্রুপে বিভক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা জয়ের আশা নিয়ে স্ব-স্ব প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ উপজেলায় বিএনপির মূলদল থেকে চেয়ারম্যান পদে হাজি সাইদুর রহমান (দোয়াত-কলম), ভাইস চেয়ারম্যান পদে আরিফুজ্জামান আরিফ (টিউবওয়েল), ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পেয়ারা বেগম (হাঁস) এবং উপজেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি নোয়াব আলী সমর্থিত চেয়ারম্যান পদে ফারহানা আক্তার রিনি (কাপ-পিরিচ) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাহফুজা পারভীন বিউটি (প্রজাপতি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অপরদিকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিত্বে আ.লীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল (আনারস), ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাফিজুর রহমান (উড়োজাহাজ), ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আয়েশা সুলতানা লাকি (কলস) এবং জামায়াত থেকে চেয়ারম্যান পদে খলিলুর রহমান (মোটরসাইকেল), ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাও. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন (চশমা) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সামসুন্নাহার মুক্তা (ফুটবল) এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন শামসুল আলম (তালা-চাবি)।

ভোটাররা বলছেন, দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি আব্দুল লতিফ অমল ও সাইদুর রহমান ব্যক্তি ইমেজের কারণেও ভোট পাবেন। পক্ষান্তরে এ উপজেলায় জামায়াতেরও ভালো সাংগঠনিক ভিত্তি থাকায় জামায়াত প্রার্থীরও বিজয়ী হওয়োর সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নির্বাচনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ত্রিমুখি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।