জীবননগর আন্দুলবাড়িয়ার নৌকা প্রতীক প্রার্থীর ভোটে কারচুপির অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন

 

জীবননগর ব্যুরো/আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: জীবননগর উপজেলার ২ নং আন্দুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মির্জা হাকিবুর রহমান লিটন তার আন্দুলবাড়িয়া বাজারস্থ প্রধান নির্বাচনী কার্যলয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, গত শনিবার অনুষ্ঠিত আন্দুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। নৌকার বিজয় ছিলো সুনিশ্চিত। শেখ হাসিনার মনোনয়ন কে উপেক্ষা করে একটি পক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ দিয়ে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেন নিকট আত্মীয় শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারকে। নির্বাচনে আমার ভোটারদের ওপর শুরু হয় পুলিশ ও তার পোষ্য সন্ত্রাসী দিয়ে শারারিক ও মানসিক নির্যাতন। বিশেষ ব্যক্তির পরিচয় দিয়ে ২ হাজার ভোটারকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে। ভোট প্রদানের দিন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সকল নীল নকসা ও পরিকল্পনা তৈরি করেন। প্রতিটি কেন্দ্রে তার আস্থাভজন প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দিয়ে অত্যান্ত নিখুতভাবে সাজানো হয়। দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্রের পোলিং এজেণ্টদের ফলাফল ফরমে জোর পূর্বক স্বাক্ষর করে নেয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করায় আমার পোলিং এজেন্টদের ঘরে আটকে রেখে পুলিশি নির্যাতন করা হয়। আমি অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। ভোট গণনা করা কালে বিশেষ দুজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে দিয়ে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার প্রতিবাদ করলে তাকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, সব থেকে বেশি ভোট কারচুপি করা হয়েছে ২ নং হারদা ও ৬ নং কর্চ্চাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। ইউনিয়নের ১০ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৮ কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয় সন্ধ্যার পূর্বে। পরিকল্পিতভাবে বিদ্যুত বন্ধ রেখে অনান্য কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার ৩ ঘণ্টা পর দুটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা দেয়া হয়। তিনি ৬ নং কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণায় ৩ শ ভোটে বিজয়ী ছিলেন দাবি করেন। তিনি বলেন, বিদ্যুত চলে যাওয়ার পর আগের ফলাফল ঘোষণা ভুল হয়েছে বলে পুনরায় ফলাফল প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত জনতা ও পোলিং এজেন্টগণ ফলাফল মেনে না নিলে আমার পোলিং এজেন্টদের রুমে আটকে রেখে পুলিশি নির্যাতন করা হয়েছে বলে তিনি লিখিত অভিযোগে দাবি করেন। এছাড়াও ২ নং হারদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার অবস্থান নিয়ে নির্বাচনী কর্মকতাকে প্রভাবিত করায় উপস্থিত জনতা প্রতিবাদ জানালে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা লাঠিচার্জসহ হাতিয়ার তুলে গুলি করতে উদ্যত হয়। প্রাণভয়ে নৌকার সমর্থক ও পোলিং এজেন্টরা কেন্দ্রে ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রায় নেন। এ সুযোগে প্রিসাইডিং অফিসার শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তিনি ২ নং হারদা ও ৬ নং কর্চ্চাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট গণণায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে উক্ত দুটি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান।