জীবননগরের দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দর পরিদর্শনের পর সমাবেশে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান

 

 

ভারতের নতুন সরকারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে

এমআর বাবু/সালাউদ্দীন কাজল: নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ভারতের নতুন সরকারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। দীর্ঘদিনের তিস্তা পানি চুক্তি সমস্যারও সমাধান হবে। বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় ও মজবুত হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার আরও বেড়ে যাবে। রাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকবে না। সম্প্রীতির ভিত আরো মজবুত হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭১ সালে ইয়াহিয়া খাঁন, ভুট্ট যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি এবং স্বাধীনতা বিরোধী কথা বলতেন,বর্তমানে তারেক জিয়া ঠিক একইভাবে তাদের সুরে সুর মিলিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। ১৯৭১ সালে তারেকের বয়স ছিলো মাত্র ৪ বছর। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। অথচ নির্বোধ ও মূর্খ তারেক লন্ডনে বসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন এবং বর্তমানে তারেক জিয়া পাকিস্তানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।

মন্ত্রী বলেন, ৩০ লাখবাঙালির রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। ওই সময় পাকিস্তানি সেনাদের সাথে হাত মিলিয়ে যারা রক্ত ঝরিয়েছিলো সেই রাজাকার আলবদর যেমনভাবে এদেশের স্বাধীনতা চায়নি,এখনও তারা সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে ২০ দলীয় মোর্চা গঠন করেছেন। এ মোর্চা যুদ্ধের সময় মা-বোনদেরকে পাকস্তানি ক্যাম্পে তুলে দিয়ে এসেছে। সভ্রম হারানো সেই মা-বোনেরা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে ক্ষমা করবে?৪৩ বছর পর যখন রাজাকার আলবদরদের বিচার কাজ শুরু হয়েছে ঠিক তখন বিএনপি রাজাকারদের বাঁচাতে তাদের পক্ষ নিয়েছে। বিএনপি যেকোনো মূল্যে রাজাকারদের বাঁচাতে এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছে।বিএনপি নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে সব থেকে দেশের বড় দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী শাহজান খান আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে তারেক জিয়া ও কোকো দুর্নীতির মাধ্যমে এদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর সে টাকা ফেরত এনেছি। জীবননগর উপজেলার দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করার ব্যাপারে গতকাল বুধবার দুপুরে স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মো. আলী আজগার টগরের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক আবু সাইফ মুকু এবং আব্দুস সালাম ঈশার যৌথ উপস্থাপনায় সুধী সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পংকজ শরণ, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো.মোয়েজ্জদ্দীন আহমেদ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য তপন কুমার চক্রবর্তী ও নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তী, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন, চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডারগার্ডের অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম মনিরুজ্জামান, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু. মো. আব্দুল লতিফ অমল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ. দা.) মো. ফরিদুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম মোর্তূজা, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আজাদুল ইসলাম আজাদ, জীবননগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি প্রমুখ।

এর আগে মন্ত্রী শাহজান খান ভারতের অভ্যন্তরে এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে ভারতের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন। এর পর তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গত ১০ মাস আগে এ স্থলবন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেছিলাম। এ ১০ মাসে স্থলবন্দরটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করার ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়েছি। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত স্থলবন্দরটি চালু হবে।

উল্লেখ্য,      দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া শুল্ক স্টেশন ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় এ চেকপোস্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তবে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলেও ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসে বসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। পরে এ শুল্ক স্টেশনের লোকবল অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। ২০০৮ সালে এ স্থলবন্দরটি পুনরায় চালু করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।