জানুয়ারি থেকেই দাম বাড়ছে বিদ্যুতের!

স্টাফ রিপোর্টার: দাম বাড়ছে বিদ্যুতের। বিদ্যুত উত্পাদন, সঞ্চালন, বিতরণ সকল পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে। এজন্য বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবে আজ মঙ্গলবার থেকে গণশুনানির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কমিশন কার্যালয়ে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিইআরসি সব প্রক্রিয়া শেষ করে নতুন দাম নির্ধারণ করবে। চলতি জানুয়ারি থেকেই নতুন দাম কার্যকরের প্রস্তাব করেছে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানিগুলো।

বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ৫১ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে পিডিবির পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সা। তবে পিডিবি সূত্র জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে তাদের প্রতি ইউনিটে বিদ্যুত উত্পাদনে ব্যয় হবে ৬ টাকা ৫৪ পয়সা। এছাড়া পিডিবি তাদের গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ২২ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। গড়ে ৭১ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। পিজিসিবির প্রতি ইউনিটের বর্তমান দাম ৩৩ কেভিতে ২২ টাকা ৯১ পয়সা ও ১৩২ কেভিতে ২২ টাকা ৬৮ পয়সা। আগামী ২১ জানুয়ারি তাদের প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে।

ওয়েস্ট জোন পাউয়ার ডিস্ট্রিবিউশন  কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ও  ঢাকা পাউয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে যথাক্রমে সাড়ে ১৮ শতাংশ ও ১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। বিতরণ কোম্পানি দুটির প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে আগামী ২২ জানুয়ারি। এছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সাড়ে ১৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) প্রস্তাব করেছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাদের প্রস্তাবের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বিইআরসি সূত্র জানিয়েছে, শুনানির পর বিচার-বিশ্লেষণ করে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হবে। মূল্যবৃদ্ধির যে প্রস্তাব পাওয়া গেছে সে অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হবে না। এছাড়া এবারও অল্প বিদ্যুত ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকছে। ৩০ ইউনিটের কম ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে কোনো কোনো কোম্পানি দাম বাড়ানোরই প্রস্তাব করেনি।

উত্তম সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যে অর্থের প্রয়োজন তা এখনই গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হবে। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে প্রত্যেক সরবরাহ কোম্পানি খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানো প্রয়োজন বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে। যদিও বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম। তাই বিদ্যুতের উত্পাদন খরচ বাড়েনি, বরং কমেছে। তবুও পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। গত অক্টোবরে বিদ্যুত উত্পাদন ও বিতরণ কোম্পানিগুলো পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কিন্তু কোম্পানিগুলোর আবেদনে তথ্যের ঘাটতি থাকায় গণশুনানি আয়োজনে দেরি হয়েছে।