জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৫তম জন্মবার্ষিকীআজ

 

অজানাঅসীম পূর্ণতা নিয়ে জন্মেছি আমি

স্টাফ রিপোর্টার:‘আমিযুগে যুগে আসি/আসিয়াছি পুনঃমহবিপ্লব হেতু/এই স স্টার শনি, মহাকালধূমকেতু। বিংশ শতাব্দীর অসম্ভবকে সম্ভব করার যুগে জন্ম আমার।’‘অজানাঅসীম পূর্ণতা নিয়ে জন্মেছি আমি। এ আমার অহঙ্কার নয়, আত্মবিশ্বাসজাতআত্মোপলব্ধির চেতনালব্ধ সহজ সত্যের সরল স্বীকারোক্তি।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৫তম জন্মবার্ষিকীআজ। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৮৯৯ সালের আজকের এদিনে পশ্চিমবঙ্গেরবর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দরিদ্রক্লিষ্ট কঠিনজীবন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বেড়ে ওঠেন দুঃখী নজরুল। সেই দারিদ্র্যই তাকে করেতোলে মহান। এনে দেয় অসংকোচ প্রকাশে দুরন্ত সাহস।প্রেম ও দ্রোহ, মানবতাবাদ ও সাম্যের অমোঘ বাণী দিয়ে তিনি আলোড়ন তোলেন বাংলা সাহিত্যে।অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশির ঝঙ্কার তোলে উদিত হন ধুমকেতুরূপে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে চক্ষুশূল হন ব্রিটিশ রাজের। ১৯১২ সালের ৬ জানুয়ারি ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশের পর সাড়া পড়ে যায় সর্বমহলে। তার এই কবিতাদেশ ও কালের সীমা ছাড়িয়ে হয়ে ওঠে মানবতার মুক্তির কল্যাণের এক অমোঘ ঘোষণা।ধর্মীয় সীমাবদ্ধতা আর জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে কবি বিশ্ব মানবতার স্বরূপসন্ধান করেছেন তার লেখনীতে। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বিদ্রোহের কবি নন, তিনিপ্রেমের কবি, সাম্য ও মানবতার কবি। নবজাগরণ, তারুণ্য, সত্য ও সুন্দরের কবি।গানে, কবিতায়, নাটকে, গদ্য সাহিত্যের সব শাখায় তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন জীবনেরনানা চিত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার লেখা কবিতা ও গান প্রেরণাযুগিয়েছে। মানুষকে উজ্জীবিত করেছে। জাতীয় কবির কৈশোর কেটেছে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ববঙ্গে)। সুস্থ থাকাবস্থায় কবি অন্তত ৩০ বার বাংলাদেশে আসেন।১৯৪২ সালের ৯ জুলাই কোলকাতা বেতারে ‘রবিহারা’ কবিতাটি আবৃত্তি করতে গিয়েকবি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হয়ে যান বাকরুদ্ধ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অসুস্থ কবিকেদেশে নিয়ে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে জিয়াউররহমান ক্ষমতায় এলে কবিকে দেয়া হয় একুশে পদক। পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদেরসময়ে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়া হয়। আজ জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষেসরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। নজরুল একাডেমী নানাঅনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমী, শিল্পকলা একাডেমী বিভিন্ন কর্মসূচিপালন করবে। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণীদিয়েছেন। কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করবে।