জনস্বার্থে দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ বাড়ছে পাঁচ বছর

স্টাফ রিপোর্টার: জনস্বার্থে দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ আরো পাঁচ বছর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০১৯ সালের সাত এপ্রিল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির বিধান রেখে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন-২০১৪’র খসড়া ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সূত্র জানায়, বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে নিয়মিত উপস্থিত থাকার জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেন, কাজের দোহাই দিয়ে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী যাতে সংসদে অনুপস্থিত না থাকেন। জরুরি কাজ থাকলে সংসদে বসেও তা করা যায়। সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত থাকাও মন্ত্রিসভার সদস্যদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

জানা গেছে, বৈঠকে পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনার সূত্র ধরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাজেটে বরাদ্দ দেয়া অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করলে কোনো অসুবিধা হবে না।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শুক্রবার যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মোবাইলফোনে ক্ষুদে বার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মূল কাজ দ্রুত শুরু করার উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দেন।  বৈঠকে গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার বিষয়টি উঠে আসে। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমসহ মন্ত্রিসভার বেশ কয়েক জন সদস্য বলেন, নির্বাচনকালীন সহিংসতা চালাতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী পেট্রোল বোমাসহ হাতেনাতে ধরা পড়ে। তাদের বিচারের বিষয়টি দ্রুত বিচার আইনের মধ্যে পড়ে। কিন্তু তাদের দ্রুত বিচার নিয়ে কোনো তোড়জোড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনকে যুগোপযোগী অথবা নতুন আইন করার বিষয়টি সমন্বিতভাবে খতিয়ে দেখতে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। সাথে সাথে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম জোরদার করারও নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় মামলা জট হওয়ার বিষয়টিও স্থান পায়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এক প্রেস ব্রিফিঙে বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনের খসড়া অনুযায়ী দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ ২০১৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো দলকে দমনের জন্য এ আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এছাড়া বিমসটেক সেন্টার ফর ওয়েদার অ্যান্ড ক্লাইমেট (বিসি ডব্লিও সি) প্রতিষ্ঠা ও বিমসটেক কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিজ কমিশন অ্যান্ড বিমসটেক কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিজ অবজারবেটরি স্বাক্ষরের জন্য দুটি প্রস্তাবের ওপর যথাক্রমে মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন (এমওএ) ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১ থেকে ৪ মার্চ মায়ানমারের রাজধানীতে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাপর সরকার প্রধানদের সাথে যোগ দেবেন। তখন এ এমওএ এবং এমওইউ স্বাক্ষরিত হবে।