জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের জনগণের বন্ধু হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘নবীন পুলিশ কর্মকর্তা, যারা আজকে এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন, তাদের এটাই বলবো যে, বিপদে জনগণের বন্ধু, এভাবেই নিজেকে গড়ে তুলবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব তা যথাযথভাবে পালন করবেন এবং সমাজের সমস্ত কালো বিষয়, যা দেশ ও সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে, যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
গতকাল রোববার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৬তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের শিক্ষানবিশ এএসপিদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সবসময় মনে রাখবেন, আপনারা জনগণের পুলিশ। কাজেই তাদের কল্যাণ এবং তাদের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা দেয়া আপনাদের দায়িত্ব। আমরা চাই, আমাদের দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমি এটাই আহ্বান জানাবো- সততা, নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার সঙ্গে আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশ একাডেমির ভিআইপি অতিথি ভবন ‘তরুণিমায়’ পৌঁছুলে হাউজ গার্ডের একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এরপর প্রধানমন্ত্রী একাডেমির ঐতিহাসিক প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছুলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও একাডেমির অধ্যক্ষ মো. নজিবুর রহমান তাকে স্বাগত জানান।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পদকও বিতরণ করেন। শিক্ষানবিশ পুলিশ কর্মকর্তা শারমিন আক্তার চুমকি কমান্ডার হিসেবে কুচকাওয়াজ পরিচালনা করেন।
অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে এবার পুলিশ বাহিনীতে যে নিয়োগ হয়েছে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য এ পদক্ষেপটা আমি মনে করি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামীতেও সেভাবেই আপনারা এগিয়ে যাবেন।’ তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, এই অভিযান চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পুলিশের নবীন কর্মকর্তারা তাদের পূর্বসূরিদের মতো দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব ও অসীম সাহসিকতার সঙ্গে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ যেন সেবা পায়, সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুুলিশ বাহিনীর সদস্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৯ হাজার ২০০ পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। পুলিশের পদায়নের ক্ষেত্রে তাদের উচ্চমান প্রদানে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি। পুলিশ বাহিনীর নবীন কর্মকর্তারা যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে পারেন এবং জাতির পিতার কাক্সিক্ষত সোনার বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখতে পারেন সেই আশাবাদও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।