চোরাই মোষসহ নাসির কসাই গ্রেফতার ॥ কুটি ও জিয়ার গাঢাকা : ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চুয়াডাঙ্গার ডিহিকৃষ্নপুর থেকে চুরি হওয়া দুটি মোষ দর্শনা পৌর পিলখানায় জবাইয়ের চেষ্টা

দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে একজোড়া চোরাই মোষ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ডিহিকৃষ্ণপুর থেকে চুরির ২ দিনের মাথায় দর্শনায় মোষ দুটি জবাই করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়লেন আলোচিত নাসির কসাই। নাসিরকে গ্রেফতারের পরপরই গা ঢাকা দিয়েছেন কুটি ও জিয়া। এ ব্যাপারে থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের ডিহিকৃষ্ণপুর ডাক্তারপাড়ার হাজি আমির হোসেনের ছেলে হামিদুল ইসলাম মাস খানেক আগে হালচাষের জন্য ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় একজোড়া মোষ কেনেন। গত রোববার রাতে হামিদুল ইসলামের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে মোষ দুটো চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় হামিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে সোমবার দর্শনায় মোষের মাংস বিক্রির মাইকে প্রচার করে দর্শনা পৌর এলাকার ঘুঘুডাঙ্গার সাদিক শরিফের ছেলে দর্শনা রেলবাজারের মাংস ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ওরফে নাসির কসাই। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে দর্শনা পৌর পিলখানায় মোষ জবাইয়ের সময় গরুব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়তে হয় নাসিরকে। গরুব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েকজন বলেছেন, নাসির কসাই মাইকে প্রচারে যে মোষ জবাইয়ের কথা উল্লেখ করেন, সেই মোষ জবাই না করে অন্যটা জবাই করলে সন্দেহ হয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পৌঁছান দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান। এ সময় দুটি মোষের মধ্যে একটি ছেড়ে দেয়া হলেও অপরটিসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় নাসির কসাইকে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মাঠ থেকে ছেড়ে দেয়া মোষটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মোষের মালিক হামিদুল ইসলাম হাজির হন দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে। চোরাই মোষ দুটো শনাক্ত করেন হামিদুল ইসলাম। এদিকে নাসির কসাই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, দুটো মোষ জবাই করে বিক্রির জন্য তাকে দেয় দর্শনা কলেজপাড়ার জনৈক কুটি ও মেমনগরের করিমপুরপাড়ার জিয়া। মাংস বিক্রির পর টাকা পরিশোধের শর্তে মোষ দুটো কেনা হয় কুটি ও জিয়ার কাছ থেকে। গরু ব্যবসায়ী ও কসাইদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন, নাসির দীর্ঘদিন ধরে চোরাই গরু ও মোষ কিনে অল্প দামে মাংস বিক্রি করে আসছেন। দেরিতে হলেও অল্প দামে মাংস বিক্রির রহস্য উন্মোচন হলো। তবে নাসির গ্রেফতারের পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে কুটি ও জিয়া। বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই আকরাম হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে গ্রেফতারকৃত নাসির ও উদ্ধারকৃত মোষ দুটোকে নেয়া হয় সদর থানায়। এ ঘটনায় মোষের মালিক হামিদুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকালই নাসির কসাইসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এসআই মিজানুর রহমান বলেছেন, কুটি ও জিয়াকে গ্রেফতারের জন্য কয়েকবার অভিযান চালানো হলেও তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। নাসির, কুটি, জিয়াসহ অভিযুক্ত ৮জনকে গ্রেফতারপূর্বক জিজ্ঞাসাবাদ করলে এলাকার গরু ও মোষ চোরচক্রের হোতাদের নাম উন্মোচন সম্ভব হতে পারে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।