চোরচক্রের দৌরাত্মে জরাজীর্ণ ভবন ও মূল্যবান মালামাল লোপাট

জয়রামপুর রেল স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নেশাখোর ও জুয়াড়িদের আস্তানায় পরিণত

দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গা জেলার বড়গাঁ নামে খ্যাত জয়রামপুর একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৬৮ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। সে সময় দু দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানিকৃত মালামাল ওঠা-নামার সুবিধাসহ যাত্রী চলাচলের জন্য দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নে জয়রামপুরে স্থাপন করা হয় রেলস্টেশন। এক সময় খেজুরগুড়সহ বিভিন্ন ব্যবসার ক্ষেত্রে জয়রামপুর হাটের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়। এ হাটে কেনা-বেচার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীদের আগমন ঘটে। সে কারণেই জয়রামপুর স্টেশনটি বেশ পরিচিতি পায়। সে থেকেই ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে আসছিলো এ স্টেশনটি। এক সময় এ স্টেশন দিয়ে খেজুরগুড়সহ বিভিন্ন পণ্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেয়া হতো। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এ স্টেশনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জয়রামপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায় জরাজীর্ণ অফিস কক্ষের কাঠের তাকের ওপর এলোমেলোভাবে পড়ে রয়েছে পুরোনো বেশ কিছু ছেড়া-ফাটা খাতাপত্র। পাশের টেবিলে দুটি টেলিফোন থাকলেও কোনো অপরেটর নেই। স্টেশনটি আগের সেই ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে স্টেশনে লোকবল না থাকায় প্রতিদিন স্টেশন ভবনের মূল্যবান মালামাল, লোহার যন্ত্রাংশ, রেলের পাতসহ সবকিছু চুরি হচ্ছে। এরই মধ্যে স্টেশন ভবন এবং দেয়ালের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে চোরচক্র। স্টেশন ভবনসহ ৬/৭ টি কোয়াটারের ইট নেই বললেই চলে। যা এরই মধ্যে চোরচক্র হজম করে ফেলেছে। জয়রামপুর স্টেশনে কার্যক্রম না থাকায় এলাকার চিহ্নিত মাদকবিক্রেতা, নেশাখোর ও জুয়ারিরা তাদের একমাত্র নিরাপদ আস্তানায় পরিণত করেছে স্টেশনের জরাজীর্ণ ভবনগুলো। স্টেশন এলাকার বেশ কয়েকজন দোকানি অভিযোগ করে বলেছেন, প্রতিনিয়ত স্টেশনের মালামাল অবাধে চুরির ঘটনা ঘটলেও যেন দেখার কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে একদিন স্টেশনটির নাম মুছে যাবে বলে অভিমত করেছেন কেউ কেউ। শুধু কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে স্টেশনের নামটি। বিষয়টির প্রতি কর্তৃপক্ষ নজর দেবে বলে এলাকাবাসী দাবি তুলেছে।