চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য চরমে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। রোগী সাধারণ হাসপাতালে গেলেই দালালরা তাদের পিছু নেয়। তাদের খপ্পরে পড়ে রোগীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। ফলে সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীরা হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এক শ্রেণির দালাল ডাক্তারদের আশেপাশে ঘুরঘুর করে। সাধারণ রোগী ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হলেই কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে যায় তাদের পছন্দের ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা না লিখলেও দালালরা ভুল বুঝিয়ে বাধ্য করে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে। অনেক সময় পরীক্ষা নিরীক্ষার টাকা গুনেই রোগীর পুঁজি শেষ হয়ে যায়। ফলে ওষুধ কেনার মতো অবস্থা থাকে না তাদের। বিশেষ কমিশন চুক্তিতে দালালরা ক্লিনিক, প্যাথলজি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে যুক্ত আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা কাস্টমস অফিসের কম্পিউটার অপারেটর আরিফুল ইসলাম সোমবার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ২১২ নম্বর কক্ষে ডাক্তার দেখাতে যান। আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমি ওনাকে দেখাতে গেলে উনি আমাকে চিকিৎসাপত্র না দিয়ে ওনার চেম্বারে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাতে নাকি ভালো করে দেখবেন তিনি। আমি অনুরোধ করি হাসপাতাল চেম্বার থেকেই দেখে দিতে। এক পর্যায়ে তার দেয়া চিকিৎসাপত্র নিয়ে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হই। এ সময় অজ্ঞাত এক দালাল আমার কাছ থেকে প্রেসক্রিপশনটি নিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঝোলাঝুলি করেন। ডাক্তার কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা না দিলেও ওই দালাল কেন পরীক্ষার জন্য বলছে। বিষয়টি ২১২ নম্বর কক্ষের ডাক্তারকে জানানো হয়। তিনিও পরীক্ষা নিরীক্ষার ইঙ্গিত দেন। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজিব রায় দালালকে পাকড়াও করতে চাইলে সে সটকে পড়ে। বিষয়টি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু হাসান মো. ওয়াহেদ রানার কাছেও অভিযোগ করা হয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তা রাজিব রায় মাথাভাঙ্গাকে বলেন, হাসপাতালে যেভাবে দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে তাতে এখানে আসা নিরাপদ নয়। আমরা শিগগিরই হাসপাতালে দালালদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনকে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।