চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেই এন্টি¯েœক ভেনম  : সাপে কাটা শিশুর পিতার সাথে প্রতারণা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ সদর হাসপাতালে এন্টি¯েœক ভেনম নেই। গতপরশু রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত পৃথক তিন স্থানে এক শিশুসহ তিনজন সর্প দংশনের শিকার হয়। এদের মধ্যে দুজনকে এন্টি¯েœক ভেনম দেয়ার প্রয়োজন না পড়লেও শিশু চম্পা খাতুনকে (৯) দিতে হয়েছে। তবে তার সবই কিনতে হয়েছে বাইরে থেকে। এজন্য ১০ হাজার টাকার জোগান দিতে হয়েছে সমাজসেবা পরিচালিত রোগী কল্যাণ তহবিল থেকে। সমাজ সেবার সহমর্মিতায় যখন শিশু চম্পার পিতা জিয়ারুল ইসলাম হন আশ্বস্ত, তখনই এক প্রতারক ১০ হাজার টাকার একটি চেক দিয়ে হাতিয়ে নিয়ে গেছে একটি মোবাইলফোন। জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত চেকটি সম্ভবত ভুয়া। চেক দিয়ে মোবাইলফোন নিয়ে পালানোর ঘটনা জানাজানি হলে অনেকেই এ মন্তব্য করেছেন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার মদনা-পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের জিরাট গ্রামের মৃত রবগুলে হোসেনের ছেলে হাফিজুল ইসলাম (৪৬) গতকাল বুধবার সকালে গ্রাম সংলগ্নমাঠে যান। কৃষি কাজ করার সময় সাপে দংশন করে। প্রয়োজনীয় স্থানে বাঁধন দিয়ে তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণে রাখার পর বলেন, সাপে কাটলেও তাতে বিষপ্রয়োগ করেনি, বা যে সাপে কেটেছে সেটা সম্ভবত বিষধর নয়। সে কারণে এন্টি¯েœক ভেনম ছাড়াই তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। এদিকে একই উপজেলার বিষ্ণুপুরের ইছাহক আলীর ছেলে লিখন আলী (২২) নিজেদের মাটির ঘরে শুয়ে ছিলো। হাতে সাপে দংশন করে। তাকেও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পর্যবেক্ষণে রাখার পর বলেছেন, ওর শরীরেও সাপের বিষ নেই। ফলে এন্টি¯েœক ভেনমের প্রয়োজন নেই। অপরদিকে চম্পা খাতুনকে পরশু রাতে সাপে কাটলে তাকে প্রথমে নেয়া হয় জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। রাতেই নেয়া হয় সদর হাসপাতালে। শিশু চম্পার শরীরে সাপের বিষের আলামত ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠলেও হাসপাতালে এন্টি¯েœক ভেনম না থাকায় সকাল পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়। সকাল হলেও টাকার অভাবে তা কিনতে না পেরে চম্পার পিতা জিয়ারুল ইসলাম দিশেহারা হয়ে পড়েন। সকাল ১০টার দিকে হাসপাতাল সমাজসেবার রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে ৫ হাজার টাকা করে দু দফায় মোট ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ টাকা দিয়েই ১০ অ্যাম্পুল এন্টি¯েœক ভেনম বাইরে থেকে কিনে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু রোগী চম্পার শরীরে দেয়া হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি ঘটতে শুরু করে। অপরদিকে বেলা গড়ানোর সাথে সাথে জিয়ারুল ইসলামের পাশে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি সমাজসেবার লোক বলে পরিচয় দিয়ে আস্থা অর্জনের নানা রকম চেষ্টা করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি জিয়ারুল ইসলামের হাতে ১০ হাজার টাকার একটি চেক দিয়ে বলেন, এটা রাখুন। মোবাইলফোনটা দিন। একটু কথা বলতে হবে। এ কথা বলে মোবাইলফোনটি নিয়ে চম্পট দিয়েছে সে লোক।
জিয়ারুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের বাড়ি গাইবান্ধা কালীর মাররায়। নদী ভাঙনে বাড়ি ঘর বিলীন হয়েছে। দিন বিশেক আগে আমরা কয়েকটি পরিবার কাজের সন্ধানে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা শহরের তেতুলিয়ার ফকিরবাগানের এক প্রান্তে ঝুপড়ি করে বসবাস শুরু করি। ওই ঝুপড়িতেই পরশু মধ্যরাতে সাপে দংশন করে মেয়ে চম্পা খাতুনকে। তাকে নিয়ে হাসপাতালে আসার পর পড়তে হলো প্রতারকের খপ্পরে।