চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আবারও বেড়েছে চোর প্রতারকের উৎপাত

পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা : এক নারী হারিয়েছেন নগদ টাকাসহ ব্যাগ অপর নারীর চুরি হয়েছে গলায় থাকা সোনার চেন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আবারও প্রতারক চোর চক্রের উৎপাত বেড়েছে। গতকাল রোববার ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দু’নারীর একজন প্রতারণার শিকার হয়ে হারিয়েছেন নগদ ২ হাজার টাকাসহ একটি মোবাইলফোন। অপর নারী হারিয়েছেন তার গলায় থাকা সোনার চেন। এ দু’নারীর একজন তার শিশু সন্তানকে ও অপরজন তার দাদির চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসে চুরি ও প্রতারণার শিকার হন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও তার সুফল এখনও পর্যন্ত মেলেনি। এর আগে বেশ ক’জন প্রতারক ও চোর চুরি অর্থ হাতিয়ে নিয়ে সটকানোর দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও তাদের ধরতে পারেনি পুলিশ। গতকাল ১৫ মিনিটের ব্যবধানে একজন পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করে এক নারীর নিকট থেকে নগদ টাকাসহ মোবাইলফোন নিয়ে সটকালেও সিসি ক্যামেরায় তাকে শনাক্তের তেমন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এছাড়া শিশু রোগীর মায়ের গলায় থাকা সোনার চেন ভিড়ের মধ্যে চুরি হলেও চোর শনাক্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়নি। পুলিশের তরফেও তেমন তোড়জোড় পরিলক্ষিত হয়নি।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বোয়ালমারী গ্রামের ৬০ বছরের ফুলজান বেগম সম্প্রতি পড়ে গিয়ে পা ভাঙেন। কবিরাজের নিকট নিয়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। গতকাল নাতনি ইরানী রোগী ফুলজান বেগমকে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সুচিকিৎসার জন্য আসেন। অটো থেকে রোগী নামাতেই ট্রলি নিয়ে সামনে আসেন এক ব্যক্তি। শাদা পোশাকে থাকলেও তিনি নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে রোগীর চিকিৎসায় ইরানীকে সহযোগিতা করতে থাকে। ইরানীর কোলে শিশু সন্তান থাকার কারণে ব্যাগ নিয়ে চলতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে দেখে পুলিশ পরিচয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ানো ব্যক্তি ব্যাগটি ধরে রাখার জন্য চেয়ে নেয়। এরপর রোগী দেখানোর জন্য টিকেট কাটার কথা বলে ব্যাগটা নিয়ে চম্পট দেয় পুলিশ পরিচয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ানো ওই প্রতারক। এ ঘটনাটি ঘটে সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে। এর ঠিক ১৫ মিনিট আগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাাতালের বহির্বিভাগে ঘটে গলা থেকে সোনার চেন কৌশলে কেটে চুরি করার ঘটনা। আনুমানিক ২৬ বছর বয়সী এক নারী (নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচছুক) তার শিশু সন্তানের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন। টিকেট নিয়ে বহির্বিভাগের দ্বিতীয়তলায় যান। সেখানে তখন মাত্রারিক্ত ভিড়। ভিড়ের মাঝে কন্যাকে চিকিৎসকের নিকট নেয়ার জন্য লম্বা লাইনেও দাঁড়ান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি দেখেন গলায় থাকা সোনার চেনটা নেই। খোঁজ খোঁজ করে খুঁজেও কি মেলে? চোর ততোক্ষণে কতোদূর কে জানে?
চুয়াডাঙ্গা সর হাসপাতালের বহির্বিভাগে দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে। অথচ চিকিৎসকদের অনেকে নির্ধারিত সময়ের অনেক দেরিতে চেম্বারে প্রবেশ করেন। চিকিৎসা দেয়া শুরু করেন যখন তখন লম্বা লাইন অতোটাই বেড়ে যায় যে, তা নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকের ধর্যচ্যুতিও ঘটে। উত্তেজনার পারদ যেনো বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে দাঁড়ানো লম্বা লাইনের। ফলে চিকিৎসকদের নির্ধারিত সময়ে তথা সকাল ৮টায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাদানের কাজে নিযুক্ত করতে পাররে চিকিৎসা নিতে আসা দূর দূরান্তের রোগী ও তাদের সাথে থাকা লোকজনের হয়রানী অনেকটাই হ্রাস পাবে। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই এ মন্তব্য করে পদস্থ কর্তাদের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন।