চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দালালের খপ্পরেপড়া রোগী রাঙার মৃত্যু

দালালি করার অভিযোগে সাগর নামের এক দালালকে গণধোলাই

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী মিজানুর রহমান রাঙা মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে রাজশাহী নেয়ার পথে ঈশ্বরদীতে মারা যান তিনি। রাঙা চুয়াডাঙ্গার নীলমাণিগঞ্জের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে। গতকাল দুপুরে রাঙার লাশ গ্রাম্যকবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে গতকালও দালালি করার অভিযোগে একজনকে গণধোলাই দিয়েছে রোগীর লোকজন।

রাঙার বড় ছেলে মোজাম্মেল হক বলেন, যে দালালরা আমাদের সাথে প্রতারণা করলো তাদের বিচার আল্লাহ করবে। ওই দালাল যদি ঠিক সময়ে রক্ত পরীক্ষা করে রিপোর্ট আমাদের দিতো তবে আমার বাবা সুচিকিৎসা পেতো। শুনেছি আমাদের চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক খুব ভালো মানুষ। আশাকরি তিনি এর একটা ব্যবস্থা নেবেন। মিজানুর রহমান রাঙা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে গতপরশু শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি  করা হয়। সকাল ১০টার দিকে ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ রোগীর রক্ত পরীক্ষার জন্য বলেন। সেখানে থাকা হাসপাতালের চিহ্নিত দালাল সিরাজ কমিশনের বিনিময়ে হাসপাতাল সড়কের অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিকের মালিক রঞ্জু ও সাইফুলকে রক্ত পরীক্ষা করার জন্য বলেন। সাইফুল রোগীর শরীর থেকে রক্ত নেন। রঞ্জু ও সিরাজ রোগীর স্ত্রী লাইলী খাতুনের কাছ থেকে ২শ ১০টাকা নিয়ে বলেন আধাঘণ্টা পর রিপোর্ট দেবো। দিন পার হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর যখন রোগীর লোকজন রিপোর্ট হাতে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। মিজানুর রহমান রাঙার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। রাজশাহী নেয়ার পথে গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে তিনি মারা যান। রাঙার মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি নীলমণিগঞ্জ বাজারে নেয়া হয়। গতকাল শনিবার বাদ জোহর গ্রামের কবরস্থানে রাঙার লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এদিকে গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সাগর নামের এক দালাল রোগীদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নেন এবং বলেন হাসপাতালে ভালো পরীক্ষা হয় না। আমি আপনাদের অল্প খরচে বাইরে থেকে পরীক্ষা করিয়ে দেবো। আশপাশের কিছু লোকজন বিষয়টি আচ করতে পেরে সাগরকে গণধোলাই দিতে শুরু করে। পরে দালাল সাগর কৌশলে পালিয়ে রক্ষা পায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাগর কিছুদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করে আসছেন। দালাল সাগরের গণধোলাই দেয়ার ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছি, সাগর যদি দালালির সাথে জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।