চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে তরুণ ব্যবসায়ী নিহত

মাত্র দু মাস আগে কেনা মোটরসাইকেল নিয়ে দোকানের হালখাতার কার্ড বিতরণে বের হয়ে বিপত্তি

স্টাফ রিপোর্টার: যানজট এড়াতে উল্টো দিকে ঢুকে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহী বাপ্পী হোসেন (২০)। গতকাল রোববার বিকেলে সে তার পৈত্রিক দোকানের হালখাতার আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করে ফেরার সময় চুয়াডাঙ্গা প্রধান ডাকঘরের সামনে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাকে উদ্ধার করে হাসপতালে নেয়ার আধাঘণ্টার মাথায় মারা যায়।

Viewty

বাপ্পী হোসেন চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার বাদল হোসেনের ছেলে। চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার নিচেরবাজারের ৩ নম্বর গলির মুদি দোকান বাপ্পী স্টোরের স্বত্বাধিকারী। সদালাপী বাপ্পী তার পিতা-মাতার একমাত্র ছেলে সন্তান ছিলো। তাকে হারিয়ে পিতা-মাতাসহ নিকটজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় দক্ষিণপাড়া কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। ট্রাক (দিনাজপুর-ট-১১-০০৬৮) ফেলে চালক আত্মগোপন করেছে। ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় দৌলাতদিয়াড়ের দিক থেকে রেলবাজারের দিকে ভুট্টা বহন করা একটি ট্রাক যাচ্ছিলো। পোস্ট অফিসের সামনের ডিভাইডারের একটি গ্যাপ দিয়ে উল্টো দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে গেলে সামনেই পড়ে ট্রাক। সড়কের পাশে বড় গর্তের কারণে ট্রাক যেমন তার বাম দিকে তেমন চাপেনি, তেমনই মোটরসাইকেল চালিয়ে ডিভাইডারের পাশ দিয়ে বের হতে পারেনি বাপ্পী। ধাক্কায় চাকায় পিষ্ট হয়। সাথে সাথে খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর জখম বাপ্পীকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫টার দিকে মারা যায় বাপ্পী।
বাপ্পী দু বোনের এক ভাই। বড় বোন বিবাহিত। ছোট বোন স্কুলছাত্রী। বাপ্পী তার পিতার সাথে মুদি দোকানে ব্যবসা করে আসছিলো। সে ছিলো অবিবাহিত। পরিবারসূত্র বলেছে, মাস দু আগেই বাপ্পী টিভিএস মেটরো প্লাস মোটরসাইকেলটি কেনে। তাদের দোকানের হালখাতার আমন্ত্রণপত্র দেয়ার জন্যই সে তার মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। অনেকেরই অভিমত, সড়ক চলাচলের উপযোগী থাকলে যানজটও ভয়াবহ হতো না। যানজট এড়াতে বাপ্পীকে ওইভাবে ডিভাইডারের উল্টো দিকে গিয়ে ট্রাকের চাকায় প্রাণ হারাতে হতো না। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান লাল্টু এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাপ্পীকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রাণ হারাতে হয়েছে। আমরা শোকাহত। এ ধরনের দুর্ঘটনার পুর্নারাবৃত্তি চাই না।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোনিয়া আহমেদ জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় বুকে ও মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে তরুণটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পাঁচটায় মারা গেছে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোহাম্মদ জানান, এ ঘটনায় ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। ট্রাকটিকে জব্দ করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।