চুয়াডাঙ্গা শহরের ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা

 

আঙুলের ছাপে বার্তা চলে যাবে অভিভাবকের মুঠোফোনে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা শহরের ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এতোদিন হাজিরা খাতায় লেখা হতো। এখন থেকে বায়োমেট্রিক যন্ত্রে আঙুলের ছাপে উপস্থিতি গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার তথ্য তাৎক্ষণিক চলে যাবে তার অভিভাবকের মুঠোফোনে। বিদ্যালয়টিতে গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় এই ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার মুহূর্তে অভিভাবকদের কাছে খুদে বার্তা চলে যাবে। এর ফলে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা কমবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দৈনিক ও সারা বছরের গড় উপস্থিতিও জানা যাবে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্য বিদ্যালয়গুলোকেও ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতির আওতায় আনা হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মনসুর উদ্দিন মোল্লা, বিদ্যালয়ের সভাপতি নুরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির চুয়াডাঙ্গা সভাপতি মাহতাব উদ্দিন।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের আঙুলে ছাপ গ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যালয়টিতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা গ্রহণ শুরু হয়। সে বলে, জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়েই প্রথম এই পদ্ধতি চালু করা হলো। প্রথম তার আঙুলের ছাপ নেয়া হলো। এতে সে গর্বিত। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭৪৭ জন পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ে ২১ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি বছরের প্রথম থেকেই ডেটাবেইস তৈরির কাজ শুরু হয়। ডেটাবেইস তৈরি চলাকালে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বায়োমেট্রিক যন্ত্র স্থাপন করা হয়। যন্ত্র সরবরাহসহ কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ঢাকার ওয়ান জিরো বিডি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, এই পদ্ধতি ব্যবহারে শ্রেণিশিক্ষকের কাজ কমে যাবে। ছাত্রীদের হাজিরার জন্য আর রোল নম্বর ধরে ডাকা লাগবে না। আর বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে অভিভাবকেরা সন্তানদের গতিবিধি জানতে পারায় স্কুল ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা আর থাকবে না।

বিদ্যালয়টিতে মোট চারটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে। কারিগরি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নিখরচায় এসব যন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়া হবে। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা বলেন, বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে এই ব্যয় মেটানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি পুরোপুরি চালু হলে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির বিষয়টি খুব সহজে শনাক্ত করা যাবে। এ বিষয়ে খুদে বার্তার মাধ্যমে অভিভাবকদের মুঠোফোনে তথ্য চলে যাবে। অভিভাবকেরা সন্তানের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি দিতে পারবেন। সর্বোপরি শিক্ষার মানোন্নয়নে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।