চুয়াডাঙ্গা লেবেল ক্রসিঙে দুর্ভোগ বেড়ে দ্বিগুন : উত্তেজনার পারদ চড়ছে প্রতিদিন

কামরুজ্জামান বেল্টু: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান সড়কের লেবেল ক্রসিঙে গতকালও উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। টানা প্রায় ৫০ মিনিট রেলগেট ফেলে রাখায় দু প্রান্তে ভয়ানক জানযটের সৃষ্টি হলে চালকসহ ছোট-বড় যানবাহনের যাত্রীদের মধ্যে পুঞ্জিভূত হতে থাকে ক্ষোভ। অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও পরিস্থিতি বেসামাল হওয়ার দ্বাারপ্রান্তে পৌঁছায়। কেন? এই দশা?
গতকাল সোমবার দুপুর ১টার পর থেকে প্রায় দু’টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শহীদ আবুল কাশেম সড়কের রেল লেবেল ক্রসিঙের গেট নামিয়ে রাখা হয়। ব্যস্ত সময়ে, ব্যস্ততম সড়কের লেবেল ক্রসিঙের গেট দীর্ঘ সময় ধরে নামিয়ে রাখার কারণে সেখানে থেমে থাকা যানবাহনের চালক আরোহীরা দেখতে পান দুটি ট্রেনের আসা যাওয়ার পাশাপাশি একটি ছোট ট্রেনের চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে থামতে দেখেন। এতেই এক ঘণ্টার বিড়ম্বনা? এতেই অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষোভের আগুনে জ্বলতে থাকেন আটকে থাকা সকলে। তাদের অভিযোগ, একটি ট্রেন এলো নি¤œমুখি। তার দীর্ঘসময় পর আর একটি গেলো ঊর্ধ্বমুখি। ট্রেন দুটির আসা যাওয়ার মাঝে যে সময় অতিক্রম করেছে তাতে দিব্যি দু দফা গেট নামানো ওঠানো করা যেতো। অথচ তা করা হয়নি। কেন? গতকাল জানতে গেলে সেই একই জবাব স্টেশন মাস্টারের। তবে তিনি গতকাল ছিলেন তটস্থ। কারণ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা স্টেশন পরিদর্শনে এসেছেন।
মহানন্দা এক্সপ্রেসটি যখন আলমডাঙ্গা স্টেশন থেকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের উদ্দেশে ছাড়ে, তখনই চুয়াডাঙ্গার লেবেল ক্রসিঙের গেটটি নামিয়ে দেয়া হয়। আলমডাঙ্গা থেকে চুয়াডাঙ্গায় ট্রেনটির পৌঁছুতে সময় লাগে প্রায় ২০ মিনিট। অপরদিকে একই সময়ে দর্শনা থেকে ঢাকাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেসটি ছাড়ার খবর পান চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার। ফলে তিনি মৈত্রী এক্সপ্রেস অতিক্রমের পূর্ব পর্যন্ত রেলগেট নামিয়ে রাখার নির্দেশনা দেন। মৈত্রী এক্সপ্রেস দর্শনা থেকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম করতেও সময় লেগেছে প্রায় ৩০ মিনিট। এছাড়াও রেলওয়েল পদস্থ কর্মকর্তাকে বহন করা মোটর ট্রলিটি আলমডাঙ্গা স্টেশন অতিক্রম করে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের পৌঁছুনোর খবর পান। ফলে লেবেল ক্রসিঙে সড়কের অসংখ্য যান আর পথচারীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। ক্ষুব্ধ জনতার কেউ উত্তেজনার পরদ চড়িয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার প্রস্তুতিও নিতে থাকেন। টান-টান উত্তেজনা দানা বাঁধলেও শেষ পর্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গতকাল লেবেল ক্রসিঙে একজন ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের দু দিকের দুটি করে স্টেশনের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দুটির। ফলে পূর্ববর্তী সচল স্টেশনের দূরত্ব বেড়েছে। বেড়েছে চুয়াডাঙ্গা লেবেল ক্রসিঙে দুর্ভোগ। কারণ, পূর্ববর্তী সচল স্টেশন থেকেই খবর দেয়া হয় ট্রেন ছাড়ার। সেই খবরের ভিত্তিতেই চুয়াডাঙ্গা স্টেশন মাস্টার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। তারই অংশ হিসেবে নামিয়ে দেয়া হয় লেরেল ক্রসিঙের গেট। প্রায় প্রতিদিনই চুয়াডাঙ্গা লেবেল ক্রসিঙে দুর্ভোগের দৃশ্য দেখা যায। তবে গতকাল সেই দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে দ্বিগুন।