চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন

ঙ্কামুক্ত জীবন চাই নিরাপদে ক্লাস করতে, পরীক্ষা দিতে চাই

 

স্টাফ রিপোর্টার: নির্বিঘ্নে শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং সহিংসতা বন্ধের দাবিতে দেশের ২ হাজার ১৫৪ কলেজের শিক্ষক-ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে অভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসাবে গতকাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর রশিদ, উপউপাচার্য আসলামুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নোমান উর রশীদসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন। উপাচার্য বলেন, লাগাতার সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে এসএসসি, এইচএসসি ও স্নাতকের ২০ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ধ্বংসের পথে। শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে আমরা একযোগে মানববন্ধন করেছি।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শিক্ষকরা বলেছেন, সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। এভাবে চলতে থাকলে দেশে শিক্ষাব্যবস্থা বলে কিছু থাকবে না। আমরা এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংস আন্দোলনকে সমর্থন করি না। ‘শঙ্কামুক্ত জীবন চাই নিরাপদে ক্লাস করতে, পরীক্ষা দিতে চাই। শিক্ষা ধ্বংসকারী সহিংসতা বন্ধ কর’ তিন বাক্যে এমনই স্লোগান লেখা ছিলো মানববন্ধন কর্মসূচির ব্যানারে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ স্লোগান নির্ধারণ করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রহমত আলী বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ‘শঙ্কামুক্ত জীবন চাই, নিরাপদে ক্লাস করতে চাই ও শিক্ষাধ্বংসকারী সহিংসতা বন্ধ করো’ স্লোগানকে সামনে রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহের সেশনজট নিরসনসহ শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের স্বপক্ষে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরকারি কলেজ শহীদ মিনার চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ঘণ্টাব্যাপি মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ একই ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

বদরগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির উদ্যোগে চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সকল শিক্ষার্থীদের আয়োজনে নিরাপদে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করা, পরীক্ষা দেয়া ও দেশের চলমান অবরোধ-হরতালে বিভিন্ন শিক্ষা কেন্দ্র ধবংসকারী সহিংসতা অবস্থা বন্ধের প্রতিবাদে গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ সড়কে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুন্সি আলমগীর হান্নানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বদরগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ মো. শরিফুল ইসলাম, সহকারী অধ্যক্ষ মো. গোলাম হোসেন ও প্রভাষক মহাদেব চন্দ্রনাথ।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো গতকাল আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ, আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও হারদী এম এস জোহা ডিগ্রি কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল দুপুরে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ওই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে একই সময় আলমডাঙ্গার হারদী এমএস জোহা ডিগ্রি কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। একই সময় আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজেও অধ্যক্ষ জিয়াউন নাহারের নেতৃত্বে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছ, এ কর্মসূচি পালন করেছে দামুড়হুদার আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজ। গতকাল বেলা ১১টার দিকে এ কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন হয়। সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ কামাল উদ্দিন। প্রধান অতিথি ছিলেন- উপজেলা আ.লীগ সভাপতি গভর্নিং বডির সদস্য সিরাজুল আলম ঝন্টু। বিশেষ অতিথি ছিলেন গভর্নিং বডির সদস্য শহিদুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন ও ইমতিয়াজ হোসেন। এছাড়াও ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ জিন্নাত আলী ও প্রভাষক মিজানুর রহমান মণ্ডল। দেশের চলমান সহিংসতা বন্ধের দাবিতে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের কলেজের সকল শিক্ষক, কর্মচারীসহ ছাত্রছাত্রীরা।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, শঙ্কামুক্ত জীবন, নিরাপদ ক্লাস ও পরীক্ষার দাবিতে মেহেরপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মেহেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুর সরকারি কলেজের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলাম। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন, প্রভাষক কাউছার আলী, খাইরুল ইসলাম, কাবিরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বারিকুল ইসলাম লিজনসহ কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। এদিকে শনিবার সকালে মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজের উদ্যোগে এ মানববন্ধন পালিত হয়। মেহেরপুর-কাথুলী সড়কে পৌর কলেজের সামনে মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন কলেজের অধ্যক্ষ একরামূল আযীম। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষ মহসিন আলী, সহকারী অধ্যাপক মাসুদ রেজা, আব্দুল খালেক, লুৎফর রহমান, মোজাম্মেল হোসেন, ও প্রভাষক আলীবদ্দীন, তৈহিদ আলী, মাহমুদা খাতুন, গোলাম সরোয়ার, মাজহারুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, উজ্বল হোসেন, শাহিনুর রহমানসহ কলেজের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। একই দিন মেহেরপুর মহিলা কলেজের উদ্যোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমন্বয়ে অনুরুপ মানববন্ধন করা হয়।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতাল ও অবরোধে বিপর্যস্ত শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদে গমনাগমন এবং সুষ্ঠু পরীক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে এগারটার দিকে গাংনীতে মানববন্ধন করেছেন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও গাংনী ডিগ্রি কলেজের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ। বক্তৃতায় মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম ও গাংনী ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০ দলের ডাকা চলমান আন্দোলনে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী নিরাপদ নয়, পরীক্ষার্থীরা বেশ উদ্বিগ্ন। সামনে এইচএসসি ও ডিগ্রি পরীক্ষা। এ সময়ে যাতে তারা নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দিতে পারে তার দাবি জানানো হয়। মহিলা কলেজের মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন গাংনী প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক রমজান আলী, প্রভাষক মহিবুর রহমান মিন্টু, হাবিবুল্লাহ মোহন, দিলরুবা ইয়াসমীন প্রমুখ। গাংনী ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসের মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমান, মোতালেব হোসেন, নাসির উদ্দীন, মেহেরুল্লাহ প্রমুখ।

এদিকে একই দাবিতে তেরাইল-জোড়পুকুরিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন ওই কলেজের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, সহকারী অধ্যাপক মাসুম-উল হক মিন্টু, মাহবুবুল আলম তুহিন, রেজাউল ইসলাম, পরিচালনা পর্যদের সাবেক সভাপতি শহিদুল হক বিশ্বাস, সাবেক সদস্য শহিদুল ইসলাম শাহ প্রমুখ।

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মাহতাবউদ্দীন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকাল ১১টার দিকে রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিবাদে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপি মানববন্ধন করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।