চুয়াডাঙ্গা বেগমপুরে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের তালিকা প্রস্তুতে জটিলতা

আউশ চাষে প্রণোদনা সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা ২৩০ চাষির
বেগমপুর প্রতিনিধি: চলছে বোরো ধান কাটার মরসুম। এ ধান কাটার পরপরই চাষিরা চাষ করবেন উফশী আউশ ও নেরিকা আউশ ধান চাষ। আর এ ধান চাষের জন্য সরকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের তালিকা মোতাবেক প্রণোদনা দিয়ে থাকে। তারই অংশ হিসাবে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ১৫শ’ চাষির তালিকা প্রস্তুত করে কৃষি বিভাগ। ৬ ইউনিয়নের চাষিদের নামের তালিকা নিয়ে জটিলতা দেখা না দিলেও বেগমপুর ইউনিয়নের ২৩০ জন চাষির তালিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক জটিলতা। তালিকার জটিলতা থেকে গেলে এসব চাষিরা প্রণোদনা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য রয়েছে অভাবনীয়। তাই কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিটি জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য খরিফ মরসুমের প্রণোদনা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যেখানে সেচের ব্যবস্থা নেই এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আউশ নির্ভর জেলাসমূহে আউশের বিভিন্ন জাত জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে এ প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আউশ আবাদে কৃষকদের উৎসাহিতকরণ, আবাদের এলাকা বৃদ্ধিকরণ, উফশী জাতের সম্প্রসারণ, ফসলসমূহের হেক্টর প্রতি ফলন বৃদ্ধি, সার্বিকভাবে ধান ফসলের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করা। তাই এ কর্মসূচির আওতায় কৃষি বিভাগ ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করে থাকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে। বোরোধান কাটার পরপরই ওই সমস্ত চাষিরা খরিফ মরসুমে উফশী ও নেরিকা আউশ আবাদ বৃদ্ধির প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে বীজ, রাসায়নিক সার এবং আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। প্রণোদনার জন্য বিঘাপ্রতি কৃষি উপকরণ সহায়তার পরিমাণ প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ধানের বীজ ৫ কেজি, টিএসপি সার ২০ কেজি, ইউরিয়া ১০ কেজি, এমওপি সার ১০ কেজি আর সেচ বাবদ ৫০০ টাকা। তারই অংশ হিসেবে কৃষি বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ১৫শ’ চাষির তালিকা প্রস্তুত করে এবং উপজেলা থেকে উপকরণ বিতরণ শুরু হয়েছে। উপকরণ বিতরণের আগ মুহুর্তে ৬ ইউনিয়নের চাষিদের নামের তালিকা নিয়ে জটিলতা দেখা না দিলেও বেগমপুর ইউনিয়নের ২৩০ চাষির তালিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, তালিকা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়ায় জমাকৃত তালিকা সংশোধনের জন্য ফেরত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তারপরও যদি ওই তালিকা অনুযায়ী মালামাল দেয়া হয় এর দায়ভার আমি নেব না বলে ওই আবেদনে উল্লেখ করেছি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর বলেন, তালিকা ঢাকাতে চলে গেছে। তালিকা মোতাবেক মালামাল দেয়া হবে। তালিকা নিয়ে কোনো জটিলতা নেই। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারী বলেন, তালিকা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে বলে শুনেছি। তবে বিষয়টি উপজেলা কৃষি বিভাগের। তালিকার জটিলতা নিরসন করা না গেলে এসব চাষিরা প্রণোদনা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করছেন। তাই কোনোভাবেই যেন চাষিরা সুবিধা বঞ্চিত না হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চাষিকুল।