চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের আড্ডায় বিএনপি নেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ১ম যুগ্মআহ্বায়ক কেন্দ্রীয় যুবদলের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদ হাসান খান বলেছেন, চুয়াডাঙ্গায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার স্বার্থে আমাকে কোরবানি দিতে অর্থাৎ সর্বোচ্চ ত্যাগেও আমি রাজি। ঐক্যবদ্ধ প্রায়শই পারে সমাজ ব্যবস্থাকে পাল্টাতে। সে চেষ্টাই চলছে।

গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হলে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ তাকে স্বাগত জানান। তিনি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের নিয়মিত আড্ডায় সামিল হয়ে সংবাদ মাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্টতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমিও সাংবাদিক। আমারও সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় রয়েছে। তবে তার চেয়ে বড় পরিচয় আমি গণমানুষের সেবক। সকলের ভালোবাসার বাবু খান হতে চাই।

সাংবাদিকদের সাথে চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন। আমরা জানি, আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী, অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। রাজনীতিতেও শক্ত অবস্থানে। ব্যবসায় বেশি নাকি রাজনীতিতেই এখন বেশি সময় দিচ্ছেন? তড়িৎ চৌকস জবাব- ‘ব্যবসায় ৩০ আর রাজনীতিতে ৭০ ভাগ সময় কাটছে আমার।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিতে কোন পদটি চাচ্ছেন আপনি? ‘সদস্য পদ পেলেও খুশি। ওর চেয়ে নিচের পদ তো আর নেই। তবে সদস্য থেকে শুরু করে ওপরের যে পদে আমাকে আমার দল যোগ্য মনে করবে সেটাই আমার প্রাপ্য বলে আমি মনে করি।’ রাজনীতিতে কোনো বিশেষ এলাকার নেতা নাকি সমগ্র চুয়াডাঙ্গার নেতৃত্বে আগ্রহী? ‘দল যেভাবে, যেখানে দায়িত্ব দেবে সেভাবে সেখানেই নেতৃত্বদানে আন্তরিক হওয়ার চেষ্টা করবো। পদের চেয়ে দলকে গোছানোটাই এখন অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সেটাই চলছে।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আকাশে তো কালো মেঘ! আপনার দৃষ্টিতেও কি তেমনটি মনে হচ্ছে না? ‘কোনো কিছুই অস্বীকার করতে চাই না, কোনো সমস্যা গোপন করেও সমাধানের পথ পাওয়া যায় না। আপনারাও জানেন, আমিও জানি। আমি মূলত সকলকে সাথে নিয়েই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিকে সাজাতে চাই। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রশ্নে সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছি। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে যদি আমাকে কোরবানিও দিতে হয় তাতেও আমার আপত্তি নেই। দীর্ঘদিনের অগোছালো দলকে সুসংগঠিত করতে প্রস্তুত। এ জন্য আমি অবশ্য চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত সকল সাংবাদিক বন্ধুদের সর্বাত্মক সহযোগিতা চাই।

চা পানের আড্ডার মাঝে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিলের আগাম আমন্ত্রণ জানানো হয়। একই সাথে উপস্থিত সাংবাদিকদের অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্বের সাথে বেশ দূরত্ব। বিএনপির রাজনীতিতে কি সাংবাদিকদের দরকার হয় না? কষ্ট মোছা হাসিমুখে তিনি বললেন, অবশ্যই নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে মিট দ্যা প্রেস করতে হতো। হয়নি। এখন হবে। যদি চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সেই সুযোগ করে দেয়। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ সাথে সাথে সম্মতি জানিয়ে বলেন, আমরা সব সময়ই সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী। চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব গণতন্ত্রের চর্চা করে। সরকারি, বিরোধী দলসহ ছোট বড় সকলকেই চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে স্বাগতম। প্রেসক্লাবের উন্নয়নসহ সকল কাজেই সহযোগিতা থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তরুণ শিল্পপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।

চা চক্রে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহতাব উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক সরদার আল আমিন, চুয়াডাঙ্গা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি অ্যাড. এসএম শরিফ উদ্দীন হাসু, সাধারণ সম্পাদক শাহার আলী, প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল মজিদ জিল্লু, কামাল উদ্দীন জোয়ার্দ্দার, অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, রাজীব হাসান কচি, শাহ আলম সনি, ফাইজার চৌধুরী, মরিয়ম শেলী, রফিক রহমান, বিপুল আশরাফ, রিচার্ড রহমান, রাজন রাশেদ, আব্দুস সালাম, জামান আকতার, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জাহিদ জীবন, হোসেন জাকির প্রমুখ। এছাড়াও বাবু খানের সাথে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন খান, মোকারম হোসেন, যুবদল নেতা মিল্টন, ঝণ্টুসহ অনেকে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ছিলো কয়েকভাগে বিভক্ত। কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয়ভাবে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। এ কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা কমিটি গঠনপূর্বক জেলা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনের আয়োজনের দায়িত্ব দেয়া হয়। নির্ধারিত ৪৫ দিন ইতোমধ্যেই অতিক্রম করেছে। এরই মাঝে আহ্বায়ক কমিটির একজন যুগ্মআহ্বায়কসহ বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতা কেন্দ্রে জেলা বিএনপির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এর ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পেশের জন্য বলা হলেও তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে কি-না তা যেমন নিশ্চিত করে জানা যায়নি, তেমনই অভিযোগ উত্থাপনকারীরাও হাল ছাড়েননি। এরই মাঝে বাবু খানকে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে পেয়ে উপস্থিত সাংবাদিকেরা আড্ডার ছলে প্রশ্নবানে কাবু করার চেষ্টা করেন। কোনো প্রশ্নেই কাবু না হয়ে হাসতে হাসতে সাবলিলভাবেই জবাব দেন বাবু খান।