চুয়াডাঙ্গা পুলিশ প্রশসান ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের মতবিনিময়  -পুলিশ সুপারের সাথে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সমঝোতা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের সাথে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সমঝোতা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের আয়োজনে চেম্বার ভবনে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ প্রশসান ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের মধ্যে গতকাল মতবিনিময় সভায় এ সমঝোতা হয়। পুলিশ সুপারের সাথে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি কোলাকোলিও করেন। এই সভাপতিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে রোজার মধ্যে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। পরবর্তীতে তা স্থগিত করে ঈদের পর কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই এক পর্যায়ে গতরাতে উভয়পক্ষের মতবিনিময় সভায় সব মিট-মাট হওয়ায় থাকলো না আর আন্দোলন ঝুঁকি।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার রাত ৯টায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের আয়োজনে চেম্বার ভবনে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ প্রশসান ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন। প্রধান অতিথি বলেন, গত ১১ জুনের কথা আমরা আজকের মতবিনিময়সভা থেকে ভুলে গিয়ে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও চুয়াডাঙ্গা পুলিশ এক যোগে কাজ করে যাবে। তিনি বলেন জেলার আত্মসামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাবে সহযোগিতা করবে পুলিশ। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কেউ যদি কোনো প্রকার হয়রানি করে তাহলে সে যে দলেরই হোক না কেন যত ক্ষমতাশালী ব্যক্তিই হোক না কেন আইনের কাঠগড়াই তাকে আসতেই হবে।
মতবিনিময় সভার সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক বলেন, আজ থেকে আমরা চুয়াডাঙ্গাকে নতুন করে গড়বার অঙ্গীকার নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ ও ব্যবসায়ী ঐক্যপরিষদ এক নতুন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হলাম। আজ থেকে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো আর পুলিশ প্রশাসন আমাদের আইনি সহায়তা দেবেন। এ সময় তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আমাদের মাঝে উপস্থিত হওয়ায় আমরা গর্বিত আনন্দিত। পুলিশের সহযোগিতা পেলে জেলাকে একটি ব্যবসা বান্ধব জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো।
এ সময় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান বলেন, গত ১১ জুন জেলা প্রশাসন কর্তৃক রেল বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন অনাকাক্সিক্ষতভাবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেনসহ দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের ডাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন। এমন পরিস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের দ্রুত হস্তক্ষেপের তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দারের পরামর্শে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ ও ব্যবসায়ী ঐক্যপরিষদের ডাকে চুয়াডাঙ্গা চেম্বারে সন্তোষজনক সমাধান হয়। এজন্য তিনি চেম্বার সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিকসহ চেম্বারের সকল নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, যারা শান্তিপূর্ণভাবে গত ১১ জুলাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মঘট পরিচালনা করেন। তিনি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সেই সকল নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গার অরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তরিকুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, মো. কলিমুল্লাহসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের সহ-সভাপতি মো. মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের জগলু, সহ-সভাপতি শাহবুদ্দিন মল্লিক, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান খোকন, ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব, রেলবাজার সমিতির সভাপতি ডা. নাজমুল খান, মাছের আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ হোসেন, চুয়াডাঙ্গা চেম্বারের পরিচালক একেএম. সালাউদ্দিন মিঠু, আরিফ হোসেন জোয়ার্দ্দার সোনা, এসএম তসলিম আরিফ বাবু, কিশোর কুমার কু-ু, সেলিম আহমেদ ও এএনএম আরিফসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
এর আগে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ চুয়াডাঙ্গা চেম্বারে আগমন করলে তাদেরকে চেম্বার নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।