চুয়াডাঙ্গা নোংরা ও ধুলো বালির শহরে পরিণত

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার শহরে ফুটপাত দখলের মহোৎসব চলছে। বেশ কয়েক মাস ধরে দখল চললেও ভাবনা এমন যেন কারোরই কিছুই করার নেই। বিশেষ করে শহরের বড়বাজার, নিচের বাজার ও পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়কে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ফুটপাত দখল করে ব্যবসা ও  নির্মাণসামগ্রী রাখায় পরিবেশ দূষণ ও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দখলের এই মহোৎসবের ফলে পৌরবাসী চরম জনদুর্ভোগে পড়েছে। জনগণকে ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোনো সঠিক নজরদারি।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় বর্তমানে ২ লক্ষাধিক জনসংখ্যা বসবাস করে। বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বর এলাকা, বড় বাজার থেকে রেলস্টেশনের দিকে শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, বড়বাজার থেকে কোর্টমোড় সড়কের শহীদ আলউল হক সড়ক, কোর্ট ট্রাফিক মোড় থেকে রেলস্টেশন সড়কের শহীদ রবিউল ইসলাম সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের দুপাশের ফুটপাতে স্থানীয় জনসাধারণ ব্যবসার মালামাল, নির্মাণসামগ্রী ইট, বালি, খোয়া ও পাথর ফেলে রেখে যান চলাচল যেমন ভোগান্তিতে পড়েছে তেমনি পথচারীরা দুর্ভোগে পড়ে। বিশেষ করে স্কুলগামী ছোট ছোট শিশুরা বেশি অসুবিধায় পড়ে থাকে। ফলে চোখে ধুলাবালি পড়ায় নানা জটিল রোগে ভোগে শিশু ও বয়স্করা। ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য চললেও নেই কারো মাথাব্যাথা। পৌরসভার ড্রেনগুলো ওভারফ্লো হয়ে কেদারগঞ্জ ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের সামনে রাস্তায় ময়লা পানি জমে চলাচলে দারুণ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। দেখে মনে হয়, শহরে নেই কোনো অভিভাবক। এভাবে চলতে থাকলে চুয়াডাঙ্গা দেশের মধ্যে নোংরা ও ধুলোর শহরে পরিণত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরে বেড়াতে আসা প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মোখলেছুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা শহরটি ভালো হলেও অতিরিক্ত ধুলা ও বালির শহরে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর মো. কামরুল ইসলাম জানান, তিনি পৌর এলাকার খাবার দোকানগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন। অন্য বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব মোয়াজ্জেম হোসেনের।

পৌরসভার বাজার পরিদর্শনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, নিচের বাজারের দেখাশোনার দায়িত্ব তার থাকলেও অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করা হলেও এ বিষয়ে একাধিকবার পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে আবারও পদক্ষেপ নেয়া হবে। সড়কের বিষয়ে জেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেখার দায়িত্ব। বড়বাজার গলির মধ্যে দেখাশোনার দায়িত্ব দোকান মালিক সমিতির।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব কাজি শরিফুল ইসলাম জানান, অবৈধ নির্মাণসামগ্রী উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের মালামাল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে না নিলে অভিযানের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় প্রস্তাব করা হয়েছে। শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা রেডক্রিসেন্ট চক্ষু হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. এমবি আজম বলেন, ধুলোবালির কারণে চোখে জীবাণুবাহিত চুলকানি, অ্যাজমা ও ফুঁসফুঁসে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। রাস্তার ধুলো খাবারে চলে যাওয়ায় পাতলা পায়খানাসহ কিডনি ও লিভার বিকল হতে পারে।