চুয়াডাঙ্গা দৌলাতদিয়াড়ের অক্সফোর্ড মডেল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রকে মেরে রক্তাক্ত জখম করেছে শিক্ষক : প্রতিবাদ করায় ছাত্রের দাদাকেও মারপিট

স্টাফ রিপোর্টার: ইংরেজি খাতা জমা দিতে দেরি হওয়ার কারণে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শাকিব হোসেনের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছেন দৌলাতদিয়াড় অক্সফোর্ড স্কুলের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম জান্টু। ছাত্রের মাথা কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। প্রতিবাদ করলে শাকিবের দাদা বৃদ্ধ আলতাফ হোসেনকেও মারধর করেন ওই শিক্ষক। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলাতদিয়াড়ের অক্সফোর্ড মডেল স্কুলে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের নিকটবর্তী হাতিকাটা গ্রামের আসলাম হোসেনের ছেলে শাকিব হোসেন (৯) অক্সফোর্ড মডেল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ইংরেজি ক্লাস নিচ্ছিলেন ওই স্কুলের পরিচালক শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জান্টু। সূত্র জানায়, শব্দার্থ লেখা খাতা জমা দিতে দেরি হওয়ার কারণে শিক্ষক জান্টু ছড়ি দিয়ে বেদম পেটান শাকিবকে। তার মাথা হাইবেঞ্চের নিচে ঢুকিয়ে পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্টিলের স্কেল দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন। মাথা কেটে রক্তাক্ত জখম হলে তাকে একটি কক্ষে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখেন শিক্ষক জান্টু। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে শাকিবের দাদা বৃদ্ধ আলতাফ হোসেন স্কুলে ছুটে যান। নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে দাদা আলতাফ হোসেনকেও (৭২) কিল-ঘুষি মারেন শিক্ষক জান্টু। এতে দাদা আলতাফ হোসেন রক্তাক্ত জখম হন। পরে এলাকার লোকজন ছুটে এসে দাদা-পোতাছেলেকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন। সেখানে তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়। শাকিবের মাথায় ৪টি সেলাই দেয়া হয় বলে হাসপাতালসূত্রে জানা যায়। এ নির্মম ঘটনার পর এলাকার সচেতন লোকজন ও অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিক্ষক জান্টু সাময়িক গা ঢাকা দেন। এ সময় সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। শাকিবের পিতা আসলাম হোসেন অভিযুক্ত শিক্ষক জান্টুর বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে ওসি লিয়াকত হোসেন জানান। এলাকাবাসী ও অভিভাবকমহল অভিযুক্ত শিক্ষক জান্টুর শাস্তি দাবি করেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বলেছে, শিক্ষক জান্টু প্রায়ই তাদের ওপর এভাবে নির্যাতন চালান।
এদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম জান্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি যখন তার হাত ধরে টান দিই, তখন পাশে বসা অন্য ছাত্রের হাতে থাকা স্কেলের আঘাতে শাকিবের মাথা কেটে যায়। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে যা ঘটে তা অনাকাঙ্ক্ষিত।