চুয়াডাঙ্গা ডিসির কাছে চাঁদা চাওয়া চক্র শনাক্ত : গোপালগঞ্জে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নিকট মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করা চাঁদাবাজচক্রের মূল চক্রের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তাকে দেয়া মোবাইলফোনের ওই সিম দাতাকে ইতোমধ্যেই গোপালগঞ্জ পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে মূল হোতাকে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ধলতে পারেনি পুলিশ।

শুধু চুয়াডাঙ্গায় নয়, মোবাইলফোনে ভীতিকর পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করা চক্রের উৎপাত দেশের অধিকাংশ জেলাতেই। এসব চাঁদাবাজচক্রের হোতাসহ সাঙ্গপাঙ্গদের প্রধান অস্ত্র মোবাইলফোন। ওরা ঠাণ্ডা মাথায় মোবাইলফোনে খুনের হুমকি দিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত করে বিকাশ বা অন্য কোনো মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ শ্রেণির চাঁদাবাজদের অনেকে ইতঃপূর্বে শনাক্তও হয়েছে। ধরাও পড়েছে। মাদারীপুরের চিহ্নিত একটি গ্রামের বেশ কজন মাঠে বসে মোবাইলফোনে চাঁদাবাজি করে বলে ইতঃপূর্বে তথ্য বের হয়ে এলেও তাদের সকলকে ধরে যেমন আইনে সোপর্দ করা সম্ভব হয়নি, তেমনই গোপালগঞ্জে গজে ওঠা মোবাইলফোনে চাঁদাবাজচক্রের মূল হোতাও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুলিশসূত্র এরকমই তথ্য দিয়ে বলেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের নিকট মোবাইলফোনে চাঁদা দাবির বিষয়টি জানার পর সদর থানায় একটি জিডি করা হয়। যে মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করা হয়, সেই ফোন সম্পর্ক তথ্য নিতে গিয়ে পাওয়া যায় গোপালগঞ্জের তথ্য। সেখান থেকেই যেমন সিম কেনা, তেমনই গোপালগঞ্জে বসেই মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করা হয়। সেখান থেকে ফোন দাতাকে ধরে আইনে সোপর্দ করা হলেও মূল হোতাকে ধরতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার। তিনি বলেছেন, গোপালগঞ্জ থানায় মামলা রুজুর পর আমরা চাঁদাবাজ ধরতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর-ঝিনাইদহসহ দেশের অধিকাংশ জেলাতেই মোবাইলফোনে চরমপন্থি পার্টির প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে। ওই চাঁদাবাজচক্রের কিছু সদস্য যেমন মোবাইলফোন নম্বর সরবরাহ করে থাকে, তেমনই ওরাই বোমা, বোমা সাদৃশ্য বস্তু রেখে আতঙ্ক ছড়িয়ে থাকে। এতে ওইসব সহযোগীরা পায় কমিশন। চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ বলেছেন, চাঁদাবাজ ধরতে আমরা সব সময়ই তৎপর। মোবাইলফোনে যে ব্যক্তি যেখান থেকেই হুমকিধামকি বা চাঁদা দাবি করুক না কেন তাকে শনাক্ত করে ধরে আইনে সোপর্দ করা এখন আর অসম্ভব কিছু নয়। কারণ ট্র্যাকিং করে মোবাইলফোনের অবস্থান থেকে শুরু করে অনেক কিছুই জানা সম্ভব। এরপরও অনেক সময় চাঁদাবাজির শিকার হলে অনেকে পুলিশের সহযোগিতা না নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এতে ওই ধরনের চাঁদাবাজরা সুযোগ পায়। তাদের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পায়। সে কারণে মোবাইলফোনে কেউ হুমকিধামকি বা চাঁবাজিসহ অপরাধমূলক কাজ করলে দ্রুত পুলিশে নালিশ করলে আমরা প্রতিকারের সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নিকট মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করা চাঁদাবাজচক্রের ডেরা গোপালগঞ্জে হলেও ছিঁচকে কিছু গ্যাং রয়েছে যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে হুমকিধামকি দিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। নতুন ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করলেই যেমন পার্টি চালানোর অজুহাত দেখিয়ে টাকা দাবি করা হয়, তেমনই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইটভাটা, মুরগির খামার করে ব্যবসা করতে গেলেও চাঁদাবাজির শিকার হতে হচ্ছে অনেকের। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজচক্রের উৎপাত লেগেই আছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এদিকে বিশেষ নজর দেয়ার অনুরোধ অসংখ্য ভুক্তভোগীর।