চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের বেগনগরেদুর্ঘটনা : করিমন আরোহী নিহত

 

 

জাকাতের শাড়ি আর চাওয়া হলো না জরিনা খাতুনের

ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: জাকাতের শাড়ি আর চাওয়া হলো না জরিনা খাতুনের। সরোজগঞ্জ বাজারে মানুষের কাছে পরনের জন্য জাকাতের শাড়ি চেয়ে না পেয়ে আলমসাধুযোগে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় ঝরে গেলো তারপ্রাণ। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনেদহ মহাসড়কের পদ্মবিলা ইউনিয়নের বেগনগর ঈদগাহ মাঠের অপর পাশে।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী ও জরিনার প্রতিবেশীরা জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদরের শঙ্করচন্দ্র বসতিপাড়ার মৃত মহর আলী ফকিরের ২য় স্ত্রী জরিনা খাতুন (৫০)। কোনো সন্তান না থাকায় স্ত্রীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে গ্রামের শেষ প্রান্তে বসবাসের জন্য তিন বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। কিন্তু মহর আলী ফকিরের মৃত্যুর পর কোথাও আশ্রয় না পেয়ে মাঠের মাঝে স্বামীর দেয়া জমিতে নামমাত্র ঘর তৈরি করে নিজের বোন ও ভগ্নিপতিকে নিয়ে এনে রাখেন। কিন্ত তাতে ও কষ্ট কাটেনি জরিনার। ঈদের সময় বড়লোকদের নিকট ফেতরা ও জাকাতের শাড়ি চেয়ে পরনের কাপড়ের চাহিদা মেটাতেন। অন্যান্য বছরের মতো গতকাল সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরোজগঞ্জ বাজারে যান জাকাতের শাড়ি চাওয়ার জন্য। কিন্তু বিধিবাম বাজারের ব্যবসায়ীদের দুয়ারে দুয়ারে একখানা শাড়ির জন্য ঘুরে শাড়ি না পেয়ে হতাশহয়ে বাড়ি ফেরার জন্য সরোজগঞ্জ বাজার থেকে কুতুবপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের তৈয়ব আলীর আলমসাধুতে ওঠেন। আলমসাধু বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে চুয়াডাঙ্গায় আসার পথে সরোজগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের বেগনগর ঈদগার নিকট পৌঁছুলে আলমসাধুর পেছনের ডান দিকের চাকার এক্সেলেটর কেটে রাস্তার পাশে খড়ির গাদার সাথে ধাক্কা মারে। পাকা রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে জরিনা খাতুন, বহালগাছির শহিদুলের স্ত্রী নাজমা খাতুন(২৬) ও ছেলে নিশান(১০) গুরুতর আহত হন। এ সময় আশপাশের লোকজন জরিনা খাতুনকে ডিঙ্গেদহ বারী ডাক্তারের নিকট আনলে ডাক্তার জরিনা খাতুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

অপরদিকে নাজমা খাতুনের আত্মীয়স্বজনেরা সংবাদ পেয়ে নাজমা ও তার ছেলে নিশানকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি ফেরেন। সংবাদ পেয়ে সরোজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সেকেন্দার দুর্ঘটনাস্থল ও জরিনার বাড়ি পরিদর্শন করেন। এ সময় এসআই সেকেন্দার বলেন, নিহত জরিনার পক্ষে কেউ মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, মামলার জন্য কোনো বাদী না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃত মহর আলী ফকিরের পারিবারিক কবরস্থানে বাদ আছর জরিনার দাফন করা হয়।