চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদকের বিবৃতি

 

 

ভাড়ায় খাটা খোলস পাল্টানো নেতার মুখে বড় বড় কথা মানায় না

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদের বক্তব্যের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক খুস্তার জামিল বলেছেন, আমি রাজাকার ছিলাম এটা কেউ প্রমাণ করতে পারলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবো।

খুস্তার জামিল এক বিবৃতিতে উপরোক্ত কথা বলে আরও বলেছেন, যে নেতা ভাড়া খাটেন, টাকা পেলেই খোলস পাল্টে, চরিত্র বদলে একেক সময় একেক জনের পক্ষ নেন। তার মুখে বড় বড় কথা মানায় না। তিনি কার কখন ভাড়ায় খাটেন তা বোঝা মুশকিল। ‘সখি তুমি কার?’ তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে, সেই ব্যক্তি দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের কাছে কতোটা গ্রহণযোগ্য তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কীভাবে? কতোটা যোগ্যতা আছে তার? দলীয় নেতাকর্মীদের অজানা নয়। আমি খুস্তার জামিল দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি আমাকে চেনেন। আমিও চিনি। বড় ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করি। তার মুখ দিয়ে বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন মানায় কী? আপনি কি ভুলে গেছেন, ১৯৯৬ সালে মির্জা সুলতান রাজার নৌকা মার্কার মনোনয়ন নিয়ে এলে তার বিরুদ্ধাচরণ করার কারণে আপনাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়? পরে আপনাকে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আপনাকে বগলের নিচে মুরগির বাচ্চা পোষার মতো করেই ঠাঁই দিয়েছিলেন। ২০০১ সালেও মির্জা সুলতান রাজার বিপক্ষে কাজ করেছিলেন। তখন আপনি চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার বিতাড়িত নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে ছেলুন জোয়ার্দ্দারের দয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হলেন। আলী আজগার টগরের মাসিক ৫ হাজার টাকা পাওয়ার আশায় তাকেও জেলা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক করতে ওকালতি করলেন। বলেছিলেন, ওস্তাদ টগরকে নেন, ও আমাকে মাসে মাসে টাকা দেবে। পরবর্তীতে ভোল পাল্টালেন, আবারও আপনি পক্ষ অবলম্বন করে আওয়ামী লীগে ভাঙন ধরাচ্ছেন। এক সময় আপনি আপনার নিজ উপজেলারই কাউন্সিলর হতে পারছিলেন না। কার দয়ায় তা পেয়েছিলন তা ভুলে গেছেন? ১৯৯৯ সালের কেরুজ অ্যান্ড কোম্পানি চত্বরে মন্ত্রীর জনসভার মঞ্চে ওঠার সুযোগই পাননি। ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়ায় মাথা ঠুঁকে কেঁদেছেন। ২০০৭ সালে বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আজগার নমিনেশন পেলে আপনি হাত মেলান আপনার চিরশত্রু মির্জা সুলতান রাজার সাথে। দামুড়হুদা ডাকবাংলোর সামনে কান্নার নাটক করে বললেন, মির্জা রাজা ভাই মনোনয়ন পেলেও খুশি হতাম। সবই ভুলে গেলেন? এখন আপনি কার সভায় প্রধান অতিথি হয়ে আমার বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগ তুলে কার খুশি করতে চেয়েছেন? আপনি সভা দিয়ে একবার দেখুন কয়জন লোক আছে। শাদা জামায় ধুলো ঝেড়ে আর যাই হোক গণমানুষের নেতা হওয়া যায় না। উপজেলা নির্বাচনে আপনার আচরণের কারণেই আওয়ামী লীগের জয়জয়কারের মধ্যেও জামায়াতের প্রার্থীর কাছে হেরেছেন। আপনার ছোট হয়েও আমি অনুরোধ জানাবো, এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে সুধরে নেন। আরো অনেক কিছু বলার আছে, বলতে পারছি না, কারণ আমি আপনাকে বড় ভাই হিসেবেই দেখি।

বিবৃতিতে বলা হয়, গতপরশু সোমবার জীবননগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে শোকসভা ও গণজমায়েত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, আমি খুস্তার জামিল নাকি রাজাকার। তিনি এর প্রমাণ দিতে পারবেন? প্রমাণ দিতে পারলে যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নেবো। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, আপনি এতোদিন ধরে দেখছেন অথচ আপনার জানা উচিত ছিলো আমি পরিশ্রম করে অর্জিত অর্থের কিছু অংশ আওয়ামী লীগের পেছনে খরচ করি। আপনি কী করেন? ভাড়া খাটেন। আমি ভাড়া খাটতে পারি না, আমি আপনার মতো দলকে বিভক্ত করার চক্রান্ত করতে পারি না বলেই কি আমাকে রাজাকার বলে নিজের অন্যায় আড়াল করতে চাইলেন। চাইবেনই তো। আপনি ওয়ান ইলেভেনের সময় কীভাবে দামুড়হুদা চন্দ্রবাস হয়ে মুজিবনগর হয়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়ে মোবাইলফোনের সিম বদলে দলের নেতাকর্মী থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তাও কি ভুলে গেছেন। যখন জেলা সভাপতি, যুগ্মসম্পাদক হাজতে, তখন আপনি পালিয়ে গেলেন। কার কাছে রেখে গিয়েছিলেন দলীয় নেতাকর্মীদের? এখন বড় বড় বুলি আওড়ানো কি আপনার মুখে মানায়?