চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার পল্লি খাসকররাসহ পার্শ্ববর্তী এলকায় আবারও চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া

ব্যবসায়ীর বাড়ির ছাদে বোমা রেখে খুনের হুমকি : চাঁদাদাবি

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার পল্লি খাসকররা উত্তরপাড়ার ব্যবসায়ী রফি শাহর বাড়ির ছাদে বোমা সাদৃস্য বস্তু রেখে খুনের হুমকি দিয়েছে চাঁদাবাজচক্র।

রফি শাহ জানান, মাস খানেক ধরে মোবাইলফোনে মোটা অঙ্কের চাঁদাদাবি করে আসছে চাঁদাবাজচক্র। দাবিকৃত চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সপ্তা দুয়েক আগে খুনের হুমকি দিয়ে একটি চিরকুট রেখে যায়। গতপরশু মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ছাদে দুটি লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো বোমা সাদৃস্য বস্তু রেখে চাঁদাবাজচক্র মোবালইফোনে জানায়। গতকাল বুধবার সকালে ছাদে গিয়ে বোমা সাদৃস্য বস্তু দেখে তিয়রবিলা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আছের আলী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমা দুটি উদ্ধার করে। পানিভর্তি বালতিতে রেখে নিষ্ক্রিয় করে। এ ঘটনায় রফি শাহ পরিবারের লোকজন নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররাসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজ ও অপহরকচক্রের তৎপরতা বেশ কিছুদিন বিরতির পর আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী গজে ওঠায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। খাসকররা উত্তরপাড়ার নবিছদ্দিন শাহর ছেলে রফি শাহর নিকট ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চাঁদাবাজচক্র। তিনি খাসকররা বাজারে ভূষিমাল ব্যবসায়ী। গত ঈদুল আযহার পর রফি শাহর আড়তে হালখাতা হয়। হালখাতার পরদিন রাত থেকে জনৈক ব্যক্তি নিজেকে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা রাসেল দাবি করে ০১৯৬৪৯৪৫০৭৮ মোবাইল নম্বর থেকে রফি শাহর মোবাইলফোনে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এরপর রফি ৩ লাখ টাকা দিতে অস্বীকার জানালে তাকে বার বার প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। মাঝে মধ্যে ওই একই নম্বর থেকে ফোন দিয়ে নিজেকে রাজা ভাই বলে দাবি করে ৩ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলে। সে টাকা দিতে পুনরায় অস্বীকৃতি জানালে চাঁদার টাকা কমিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। গতকাল বুধবার সকালে রফির স্ত্রী ছাদে ধান শুকাতে গেলে ছাদে ২টি বোমা দেখতে পান। তিনি তখন স্বামী রফির নিকট মোবাইলফোন করলে রফি বাজার থেকে লোকজন নিয়ে বাড়িতে ছুটে যান। পরে তিয়রবিলা ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই আছের আলীকে খবর দেয়া হয়।  পরে তিনি এসে লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো ওই বোমা ২টি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

এ বিষয়ে তিয়রবিলা ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ‌আছের আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জর্দ্দার কৌটায় লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো বোমা সাদৃস্য বস্তু দুটি খুলে তাতে মাটি পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষকে আতঙ্ক করার জন্য হইতো কেউ এগুলো রেখে দিয়েছে।

এদিকে আইলহাস ইউনিয়নের পাইকপাড়ার পূর্বপাড়ার তাইজাল হোসেনের ছেলে শাহাজাহান আলী দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরে আসলে চাঁদাবাজরা তার কাছে ৬ লাখ টাকা চাঁদাবাদি করেছে বলে জানা গেছে। শাহাজাহান আলী চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকেও খুনের হুমকি দেয়া হয়েছে। গত শনিবার খাসকররা বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি পাইকপাড়ায় ফেরার পথে খাসকররা উত্তরপাড়ায় অতুলের বাঁশবাগানের নিকট পৌঁছুলে তাকে লক্ষ্য করে একটি রাম দা ছুঁড়ে মারে। শাহাজাহান আলী অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেছেন। তার  পরিবারের সদস্যদের মাধে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, পূর্বে এলাকায় পুলিশি অভিযান জোরদার করা হলে সে সময় এলাকার অনেক অপরাধীচক্র গ্রেফতার হলেও বর্তমানে তারা অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে শুরু করেছে। এলাকাবাসী নতুন করে এসব সন্ত্রাসী গজে ওঠায় চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে। এসব অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করে আইনে সোপর্দ করার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।