চুয়াডাঙ্গায় মাঝরাতে মশুলধারে বৃষ্টি : বিদ্যুত সরবরাহে বেহালদশা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় দিনে ও রাতে মেঘের ঘনঘটা থাকলেও তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে মেঘ দেখে দফায় দফায় বিদ্যুত চলে গেছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়া দেখে অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, মেঘ আর মৃদু বাতাস দেখেই বিদ্যুত ভয় পেয়েছে। অবশ্য গত মধ্যরাতে ঝড়ো বাতাসের সাথে বৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে বাগেরহাট, রাজবাড়ী, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর ও নেত্রকোনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে দুই শিক্ষার্থীসহ মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে গতকাল আলমডাঙ্গার জামজামিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় কালবোশেখিতে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকজন দিনমজুর বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কামলা গ্রামে একটি কলাবাগানে কাজ করছিলেন। দুপুরের দিকে সেখানে বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে বজ্রপাতে উপজেলার ছোট কুমারখালী গ্রামের কালিপদ মজুমদার (৫০) ও গড়ঘাটা গ্রামের রফিকুল ইসলামের (২৫) মৃত্যু হয়। আহত হন সাইফুল শেখ (২৫) নামের একজন। তাকে পিরোজপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলায় বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো শিক্ষার্থী রাজু মোল্লা (১৬) ও কৃষক লাবলু মোল্লা (৪২)। রাজু উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের শায়েস্তাপুর গ্রামের ইশারত হোসেন মোল্লার ছেলে। সে এবার রাজাপুর ইয়াছিন ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। কৃষক লাবলুর বাড়ি সুলতানপুর ইউনিয়নের ধমর্শী গ্রামে। কিশোরগঞ্জ বৃহসইতবার বিকেল চারটার দিকে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার মধ্য অষ্টগ্রাম বড় হাওরে বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে মো. সালু মিয়া (৩৮) ও মো. শহিদুল্লাহ (৪০) নামের দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের বাড়ি অষ্টগ্রামে। অষ্টগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুম তাঁদের মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামে বজ্রপাতে হাসান মোল্লা (১৬) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সে স্থানীয় কৃষ্ণনগর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি নাজিমউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বেলা দুইটার দিকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে হাসান বাড়ির পাশে মাঠ থেকে গরু আনতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি এসএম মাছুদুল আলম জানান, বেলা পৌনে দুইটার দিকে নেত্রকোনার সদর উপজেলার মেদনী নোয়াপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে আবদুল খালেক (৫০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

জামজামি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আলমডাঙ্গার জামজামি-খাসকররা ও ডাউকি ইউনিয়নের ব্যাপক বৃষ্টি ও কালবোশাখির ঝড়ের আঘাতে কাঁচা ঘরবাড়ি-গাছগাছালি, পানবরজ ও মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের আগে থেকেই বিদ্যুত বন্ধ হলেও ২৫ ঘণ্টা পার হলে ও মেলেনি বিদ্যুতের দেখা। বিদ্যুতবন্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আলমডাঙ্গা জামজামি সড়কের যমুনায়  রাস্তার দু পাশের গাছ ভেঙে যান চলাচলে বিভ্রাট সৃষ্টি করে। একইভাবে ঘোষবিলার রামদিয়া সড়কের গলায়দড়ি ব্রিজ থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত রাস্তার গাছপালা ভেঙে গতকাল দুপুর পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে থাকে।