চুয়াডাঙ্গায় বহুতল ভবনগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপনের ব্যবস্থা : বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা

কিছু ভবনে ফায়ার এক্সটিংগুইসার থাকলেও তা প্রয়োজনে ব্যবহার করার মতো প্রশিক্ষণ নেই সংশ্লিষ্টদের
খাইরুজ্জামান সেতু: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে একের পর এক বড় বড় ভবন নির্মাণ হচ্ছে, শহরের পাড়া মহল্লাগুলোতেও গড়ে উঠছে অট্টালিকা। অথচ এসবের একটিতেও প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হচ্ছে না। ফলে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, বহুতল ভবন নির্মাণ করা হলে বিধি মোতাবেক হাইডেন্ট সিস্টেম, স্প্রিংলার সিস্টেম, স্মোক ডিটেক্টর, হিট ডিটেক্টর, পানি রিজার্ভ রাখার ব্যবস্থাসহ ফায়ার এক্সটিংগুইসারের ব্যবস্থা রাখার কথা। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের দু’ধারের অধিকাংশ স্থানেই গড়ে তোলা হয়েছে বড় বড় ভবন। কিছু রয়েছে নির্মাণাধীন। নির্মাণ সম্পন্ন করা ভবনগুলোতে যেমন নেই ধোয়া ও তাপ শনাক্তকরণের যন্ত্র, তেমনই নেয় আগুন নেভানোর মতো পানি মজুদের ব্যবস্থা। অগ্নিকাণ্ড বা বড় ধরনের দুর্যোগে ভবন থেকে দ্রুত বের হওয়ারও বিশেষ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হয়নি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে গেলে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার খালিদ হোসাইন বলেন, আমরা অগ্নিকাণ্ডই শুধু নয়, সকল প্রকারের দুর্ঘটনা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাত্মক সচেষ্ট। অথচ সাধারণ মানুষের মধ্যে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো সামান্য প্রস্তুতিতেও তেমন আন্তরিকতা পরিলক্ষিত হয় না। বিধি মোতাবেক বড় বড় ভবনগুলোতে যা রাখার কথা তা তো রাখা হয়নি, কিছু প্রতিষ্ঠানে বা বাড়িতে ফায়ার এক্সটুনেচার আছে। তাও কীভাবে কাজে লাগাতে হয়, সে বিষয়ে দায়িত্বশীলদের তেমন প্রশক্ষিণ নেই। ফলে অগ্নিকা- বা কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েই চলেছে।
চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়ছে মানুষ। দ্রুত আবাদি জমিসহ বন-বাগান উজাড় করে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসন। শহরের পরিধি শুধু বাড়ছেই না, শহরের মধ্যে গড়ে তোলা হচ্ছে বড় বড় ভবন। বহুতল ভবনে মানুষের বসবাসের পাশাপাশি বিপণন কেন্দ্রও স্থাপন করা হচ্ছে। শহরের পাড়া মহল্লাগুলোর পথ এতোটাই অপ্রশস্ত যে, ফায়ার স্টেশনের গাড়ি তো দূরের কথা অ্য্যাম্বুলেন্সও চলাচল করতে পারবে না। এসব গলির ভেতরে কিছু বাড়ি নির্মাণ করে সদর দরজা এতোটাই ছোট করা হয়েছে যে ভেতরে কেউ মারা গেলে লাশটিও খাটিয়ায় তুলে বের করা যাবে না। আড়কোলা করে বের করে বাইরের সরু সড়কে রাখতে হবে। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ? পৌরসভা সড়ক প্রশস্তকরণসহ ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন দিলেও কেন অনিয়ম প্রশ্রয় পাচ্ছে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা সপ্তাহের দু’দিন নিয়মিত মহড়া দেন। রোববার দিনে আগুন নেভানো আর বৃহস্পতিবার রাতে দুর্যোগ মোকাবেলা ও উদ্ধার তৎপরতার মহড়া। একই সাথে ছড়ানো হয় সচেতনতা। বতর্মানে চলছে খরা মরসুম। ফলে এ সময় আগুন ব্যবহারে সকলকে বেশি বেশি সতকর্তার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক শট সার্কিটসহ আগুন লাগতে পারে এরকম ঝুঁকিপূর্ণ স্থান মেরামতসহ সর্বাত্মক সজাগ থাকার পুনঃপুন তাগিদ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।