চুয়াডাঙ্গায় ফকিরানে এসে ফরিদপুরের শাহ ফরিদের গোমর ফাঁস : গ্রেফতার

মসজিদের সামনে দাড়িয়ে কন্যাদায়গ্রস্ততার কথা বলে মসুল্লিদের নিকট হাত পেতে প্রতারণা?

স্টাফ রিপোর্টার: কন্যাদায়গ্রস্ত কিংবা জটিলরোগে আক্রান্তের কথা বলে মানুষের কাছে হাত পাতা কিছু মানুষের শুধু স্বভাবই নয়, পেশাও। এ ধরনের পেশাধারী অর্থলিপ্সুরা মূলত ভিন এলাকায় গিয়েই অন্যের সহানুভূতি পেতে মসজিদের বারান্দাটাকেই বেশি কাজে লাগিয়ে থাকে। এ ধরনের পেশাধারী প্রতারকদের কোনো এলাকায় বলে গামালে যাওয়া, কোনো এলাকায় এটাকে বলা হয় ফকিরান।
চুয়াডাঙ্গায় ফকিরানে এসে সপ্তাহ জুড়ে আয় করা প্রায় ৫ হাজার টাকাসহ মসুল্লিদের হাতে ধরাপড়েছে ফরিদপুর বোয়ালমারির বাজিদাসপুরের শাহ ফরিদ (৫০)। কন্যা দায়গ্রস্ততার কথা বলে গতকাল সোমবার বাদ এশা চুয়াডাঙ্গা বাদুরতলাস্থ বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের সামনে দাড়িয়ে হাতপাতার সময় কিছু মসুল্লির প্রশ্নের মুখে পড়ে সে। সন্তোষজনক জবাবের বদলে বিভ্রান্তকর ঠিকানা দিলে সন্দেহ ঘনীভূত হয়। শেষ পর্যন্ত প্রতারণার বিষয়টি পরিষ্কার হলে তাকে পুলিশে দেয়া হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মসজিদের মসুল্লিদের কয়েকজন বলেছেন, বাদ এশা মসজিদের সামনে দাড়িয়ে একজন কন্যা দায়গ্রস্ততার কথা বলে টাকা চাওয়া শুরু করে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। তাকে তার বাড়ি কোথায় জানতে চাওয়া হলে প্রথমে বলে মুন্সিগঞ্জে। আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জে বলে দাবি করলেও ভাষার সাথে মিল না পাওয়ায় বিস্তারিত ঠিকানা চাওয়া হলে ওই ব্যক্তি নিজেকে ঈশ্বরদীর বাসিন্দা বলে দাবি করে। একেক সময় একেক রকম পরিচয় দিতে শুরু করলে তাকে নেয়া হয় পাশের একটি আয়রণের আসবাবপত্র তৈরি ও বিক্রির দোকানে। সেখানে বসিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে প্রতারণার কথা স্বীকার করে। এরই মাঝে ওই ব্যক্তির ফোনে রিং করে হাবিব নামের একজন। সে নিজেকে ওই ব্যক্তির ছেলে পরিচয় দিলেও প্রতারণা করতে এসে চুয়াডাঙ্গায় ধরাপড়ার খবর শুনেও তেমন উদ্বিগ্ন হওয়ার আলামত মেলে না। শেষ পর্যন্ত খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায়। থানার এসআই নাজমুল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মসুল্লিদের মাঝ থেকে ওই শাহ ফরিদ বলে পরিচয় দেয়া ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে থানায় নেন। গতরাতে তাকে থানার গারদে রাখা হলেও কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে। পুলিশ এরকমই তথ্য দিয়ে বলেছে, ওই ব্যক্তির দেয়া পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই জানা গেছে, শাহ ফরিদ নামের ওই ব্যক্তি সপ্তাহখানেক ধরে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে মসুল্লিদের নিকট থেকে টাকা নিয়েছে। গ্রেফতারের সময় তার নিকট থেকে ৪ হাজার ৯শ ৫১ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।