চুয়াডাঙ্গায় দু দিন দু রাত রশি দিয়ে বেঁধে রাখা কিশোরের পলায়ন?

চুরির সময় ধরা পড়া কিশোরকে নিয়ে গৃহস্থের ভাবনা

 

সাইফ জাহান: চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার একটি বাড়িতে দু দিন দু রাত রশি দিয়ে বেঁধে রাখার পর গতকাল রোববার কৌশলে পালিয়েছে দামুড়হুদা কার্পাসডাঙ্গার কিশোর হেলাল। গত শুক্রবার ঘরের ভেতরে চুরির সময় হাতেনাতে তাকে ধরা হয়। ধরে প্লাস্টিকের রশি দিয়ে বেঁধে শুধু স্বীকারোক্তিই আদায় করা হয়নি, তাকে বিপথ থেকে ফেরানোরও সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয় বলে জানিয়েছেন গৃহকর্তা নজরুল ইসলাম।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের গুলশানপাড়ার প্রস্তাবিত শিশু ও প্রবীণ পুনর্বাসন কেন্দ্র লেখা সাইনবোর্ড সংলগ্ন নজরুল ইসলামের বাড়িতে দু দিন ধরে এক কিশোরকে বেঁধে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়। এ খবর পেয়ে গতকাল রোববার দুপুরে ওই বাড়িতে গেলে কিশোরকে বাঁধা সেই প্লাস্টিকের রশি পড়ে থাকতে দেখা গেলেও কিশোরকে পাওয়া যায়নি। কোথায় গেলো বেঁধে রাখা কিশোর? এ প্রশ্ন করতেই গৃহকর্তা নজরুল ইসলাম চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বসতে বলেন। তিনি একাই বসবাস করেন ওই বাড়িতে। মাটির হাঁড়িতে ভাত রাঁধেন তিনি নিজেই। নিজের তৈরি মশক নিধন স্প্রে করে নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশে চাকরি করতাম। স্টেনো ছিলাম। মেহেরপুরের গাংনী ঝোড়পাড়ায় পৈত্রিকভিটে। এখন চুয়াডাঙ্গার এ বাড়িতেই থাকি।

সে না হয় হলো। কিশোরকে বেঁধে রাখার কাহিনিটা বলুন? এরপর বৃদ্ধ নজরুল ইসলাম গড়গড় করে বলতে শুরু করলেন তার ল্যাপটপ চুরির কাহিনি। তিনি বললেন, গত ১৯ এপ্রিল ঘর থেকে একটি ল্যাপটপ চুরি হয়। চুরির পর ভেবেছি কে চুরি করলো। বুঝতে পারিনি। গত শুক্রবার দুপুরে যখন গোসল করছিলাম তখন ঘরে ঢোকে কিশোর। ওই সময় আমার এক বন্ধু আসে। তার সহযোগিতায় কিশোরকে হাতেনাতে আটক করি। রশি দিয়ে বাঁধা হয়। সে ল্যাপটপ চুরির কথা স্বীকার করে বলে, দুজনে ওটা চুরি করেছিলাম। ওর সেই সহযোগী সম্পর্কে তথ্য নিতে শুরু করি। ওর ঠিকানা নিয়ে ওর মায়ের কাছে কার্পাসডাঙ্গায় মোবাইলফোনও করি। ওর মা বলে, ওর হাত পা কেটে দাও। এ কথা শুনে কিশোরকে কি করবো তা ভাবতে শুরু করি। শহর ফাঁড়ির ইনচার্জও এসে ওই কিশোরকে দেখে যায়। রশি দিয়ে বাঁধা থাকলেও দুদিন দু রাত কাছে কাছেই রেখেছি। পাশে নিয়ে ঘুমিয়েছি। পরে ওকে সুপথে ফেরানোর পরিকল্পনা করি। নিড়ানির কাজ দিই। বাগান বেশ সুন্দর করেই পরিষ্কার করলো। সকাল ১১টার দিকে বাথরুমে ঢুকলো। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে আমাকে ডাকলো। দরজা খুলতে গেলাম। ফিরে এসে দেখি হেলাল পালিয়েছে।

পালিয়েছে নাকি মেরে গুম করেছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন এরকম অভিযোগ কেউ তুললে নির্ঘাত আমাকে জেলে যেতে হবে। তাতে আপত্তি নেই।