চুয়াডাঙ্গায় জেএমবি’র বোমা হামলা মামলা : নয় বছরেও অধিকাংশ সাক্ষ বাকি

 

স্টাফ রিপোর্টার:আজ ১৭ আগস্ট। নয় বছর আগে অর্থাৎ ২০০৫ সালের এই দিনে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় জেমএমবি। চুয়াডাঙ্গায় বহুল আলোচিত সিরিজ বোমা বিস্ফোরণেরমামলাটি এখনও বিচারাধীন। মামলার ৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বেশির ভাগ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও বাকি। আইনজীবীরা বলছেন, আসামি ও সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে মামলার এই দীর্ঘ সূত্রতা দেখা দিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় সিরিজ বোমা হামলা মামলার অন্যতম আসামি রকিব হোসেন ওরফে হাফেজ মাহমুদের নামে দেশে ২৯টি মামলা ছিলো। এরমধ্যে একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে পালানোর পরদিন টাঙ্গাইলে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। অপর আসামি শায়খুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে কোথায় গেছে তা কারা কর্তৃপক্ষ সঠিক জানাতে পারেননি।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সারাদেশের সাথে চুয়াডাঙ্গায় সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওইদিন চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট মোড়, সদর থানা, তথ্য অফিস, রেলস্টেশন, মাছপট্টি চত্বরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে এবং শিল্পকলা একাডেমী চত্বর থেকে একটি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ঘটনার পর প্রতিটি জায়গা থেকে জেএমবির প্রচারপত্র উদ্ধার করে।

এদিকে১৭ আগস্টের বোমা বিস্ফোরণে চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড় গ্রামের বাদল হোসেন (৩৭) ও হাতিকাটা গ্রামের হিরক হোসেন (২৫) নামের দু ব্যক্তি বোমার আঘাতের ক্ষত সাতবছর ধরে বয়ে বেড়ালেও সরকারি, বেসরকারি ও সমাজের দানশীল কেউ সাহায্যে এগিয়ে না আসায় চরম দারিদ্রতার মধ্যে তাদের দিন কাটছে। বোমা বিস্ফোরণে বাদলের ডান চোখ চিরতরে অন্ধ এবং হিরকের ডান চোয়ালের মাংস ঝলসে যায়। সেই স্মৃতি এখনও তারা বয়ে বেড়াচ্ছে।

বাদল হোসেন জানান, ২০০৫ সালে বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করাতে সে সময়ে বেশকিছু টাকা খরচ হয়। ওই সময়ে অনেকেই সাহায্যের কথা বললেও পরবর্তীতে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।

ঘটনার পর সদর থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মোতালেব বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান খাঁন তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৮ মার্চ জেএমবি’র খুলনা বিভাগীয় প্রধান রকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ, পিতা আব্দুস সোবহান সাং ফুলসেন্না, থানা-মেলান্দহ, জেলা জামালপুর এবং এসহার সদস্য শায়খুল ইসলাম ওরফে রাকিব ওরফে মুয়াজ, পিতা আলতাফ হোসেন, গ্রাম পঞ্চকরণ,থানা মোড়েলগঞ্জ, জেলা বাগেরহাটকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ বিচারাধীন এই মামলায় মোট সাক্ষীর সংখ্যা ৪৬ জন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত কয়েকজন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২’র সহকারী সরকারি কৌঁসুলী অ্যাড. বেলাল হোসেন জানান, মামলার ধার্য দিনে আসামি ও সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে মামলাটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে বিলম্বিত হচ্ছে।