চুয়াডাঙ্গায় জরিপে ৯৪ প্রত্নবস্তুর সন্ধান মিলেছে সুলতানি আমলের মুসলিম নিদর্শন

 

এমআর বাবু: চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪টি উপজেলায় পুরার্কীতির অনুসন্ধান চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক দল সুলতানি ও সেন আমলেরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঐতিহাসিক ৯৪টি প্রত্নবস্তুর সন্ধান পেয়েছেন। চলতি বছর অনুসন্ধান চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ দল খুঁজে পেয়েছেন হযরত শাহনূর (র.) বাগদাদী কর্তৃক ব্যবহৃত মাথার টুপি, পোশাক ও হাঁসা। জীবননগর উপজেলার ভৈরব নদী তীরবর্তী দৌলৎগঞ্জে উঁচু ডিম্বাকৃতির একটি ডিবি পাওয়া গেছে। অনুমান করা হচ্ছে এটি সেন আমলের শেষের দিকের। দামুড়হুদার চারুলিয়ায় পাওয়া গেছে পনের শতকের ব্যবহৃত পুরাতন শীল, পোড়ামাটির তৈল প্রদীপ, টেরাকাটা ইট, ২৮৬ বছর পূর্বে হিজরি ১১৫১ সনে ব্যবহৃত দিল্লির সম্রাট মোহাম্মদ শাহ’র নাম অঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা ও বাংলার স্বাধীনতা হরণকারী লর্ড ক্লাইভের বুকসেলফ, টেবিল ও চেয়ার। গত মাসে প্রত্নতাত্ত্বিক দল তাদের অনুসন্ধানের শেষ পর্যায়ে ৯৪টি এ পুরাকৃর্তী ও প্রত্নবস্তুর সন্ধান পান। সন্ধান পাওয়া এসব ঐতিহাসিক স্থান খনন করলে ওয়ারি-বটেশ্বরের মতো নিদর্শন বের হতে পারে বলে অনুসন্ধান দল অনুমান করছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ টিম গত জানুয়ারি মাস থেকে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে।

প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ ও অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে জরিপের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান গোলাম ফেরদৌস জানান, এ পর্যন্ত ১৭টি ক্যাটাগরি যেমন- প্রাচীন মসজিদ, মন্দির, দরগা মাজার, নীলকুঠি, ঐতিহাসিক ইমারত, প্রত্নঢিবি, প্রাচীন জলাশয়, আবাসিক স্থাপনা ও গীর্জাসহ ৯৪টি প্রাচীন স্থাপনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এসব স্থাপনা জরিপের পাশাপাশি সাত সদস্যেও সমন্বয়ে গঠিত জরিপ টিম বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্তুও উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত প্রত্নবস্তুর মধ্যে রয়েছে- চুয়াডাঙ্গা জেলার ঘোষবিলা গ্রাম থেকে হযরত শাহনূর (র:) বাগদাদি কর্তৃক ব্যবহৃত ৬শ বছরের পুরাতন টুপি, বস্তু ও হাঁসা। পঞ্চদশ শতকের সাক্ষবাহী পাথরের শীল, পোড়ামাটির তৈল প্রদীপ, কারুকার্যখচিত ও অলঙ্কৃত ইট, প্রাচীন ইমারতের বিভিন্ন নির্মাণ উপকরণ, মোঘল আমলের মুদ্রাসহ বাংলার স্বাধীনতাহরণকারী রবার্ট ক্লাইভ কর্তৃক ব্যবহৃত চেয়ার-টেবিল, দেরাজ, হটনট ও ফাইল কেবিনেট। তিনি জানান, এর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু স্থান খনন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মহলকে জানাবেন।