চুয়াডাঙ্গায় কাইযেন কনভেনশন সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ

অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছাড়াই আনন্দের সাথে উন্নয়ন অব্যাহত রাখা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় কাইযেন কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-বিপিএটিসি ও জাইকার উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। কনভেনশন পরিচালক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে কনভেনশনের উদ্বোধন করেন, প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। বিপিএটিসির উপপরিচালক রাজীবুল ইসলামের সঞ্চালনায় চুয়াডাঙ্গার ২২টি সরকারি দফতরের প্রতিনিধিরা তাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উপস্থাপন করেন।

প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, জাপানি ভাষা কাইযেন এর অর্থ অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছাড়াই আনন্দের সাথে উন্নয়ন অব্যাহত রাখা, উন্নয়নকে গতিশীল করা এবং তা টেকসই করা। তাহলে, দ্রুততম সময়ে এ দেশে উন্নত দেশে পরিণত হবে।

কাইযেন কনভেনশনে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনায় ভোটের মাধ্যমে সদর উপজেলা ভূমি অফিস (এসিল্যান্ড) প্রথম স্থান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস দ্বিতীয় স্থান এবং উপপরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয় তৃতীয় স্থান অধিকার করে।

কাইযেন কনভেনশনে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দীন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-দামুড়হুদা সার্কেল) কলিমুল্লাহ, বিপিএটিসির গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, সদর এসিল্যান্ড পুলক কুমার মণ্ডল, আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা, জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রার নৃপেন্দ্র রায়, বিআরডিবির উপপরিচালক তাপসী রানী সাহা, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল কুমার পাল, জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ইয়াকুব আলী, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, সমাজসেবা অধিদফতরের উপপরিচালক এসএম রফিকুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ কুমার সাহা ও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাশরুরসহ সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

কাইযেন কনভেনশনে বাড়িওয়ালাদের নাম ডাটাবেজ, ভাড়াটিয়াদের ডাটাবেজসহ ৪টি বিষয় উপস্থাপন করে পুলিশ বিভাগ। আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাথরুম পরিচ্ছন্ন, বাউন্ডারী ওয়াল দেয়া, রোগীদের খাবার টেবিল প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়। এলজিইডি বিভাগ নীলমনিগঞ্জ- ডিঙ্গেদহ সড়কে রাস্তার পাশে মাটি দেয়া ও ঝোপ-ঝাড় পরিস্কার করেছে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা সৌন্দর্যবর্ধন ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করেছে। সদর এসিল্যান্ড অফিস তথ্য সেবা কেন্দ্র, রেকর্ডরুম বিন্যস্তকরণ ও কম সময় ও কম খরচে নাম খারিজসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করছে। মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ সমবায় ভিত্তিতে শিক্ষকদের জন্য ১০টি স্কুলে ১৫৯ জন শিক্ষকের মাঝে ল্যাপটপ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষকদের পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। কৃষি  সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের চোখের সুরক্ষা ও বিষ প্রয়োগে শরীরকে সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জেলা খাদ্য বিভাগ রেকর্ডরুম বিন্যস্তকরণ, ছাদ পরিস্কার ও গাছ কর্তন এবং ৩০ কেজি বস্তায় ভিজিডির চাল বিতরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জেলা মৎস্য বিভাগ মাছ চাষিদের পুকুরের সংখ্যা নির্ধারণ ও ওয়েভসাইট নির্মাণ করেছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস পরিস্কার পরিচ্ছন্ন- পা ধুয়ে অফিসে প্রবেশের ব্যবস্থা করেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ আর্সেনিকমুক্ত পানি শোধনাগার নির্মাণ করেছে। সমাজসেবা অধিদফতর ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করেছে। যুব উন্নয়ন অধিদফতর ৫০টি বিলবোর্ড নির্মাণ করেছে যা বিভিন্ন স্থানে টাঙানো হবে। এছাড়া বিভিন্ন বিভিন্ন বিভাগ তাদের বিভাগীয় উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন।

কাইযেন কনভেনশনে জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকাণ্ডের কাইযেন বিষয় তুলে ধরেন। ইটভাটার কারণে মাটি রাস্তার না আসে সে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পার্কে অভিযান চালিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে। এখন পরিবার নিয়ে মানুষ পার্কে যেতে পারছে। ঝোপ-ঝাড় কাটাই মানুষের নিরাপত্তা বেড়েছে, মশক নিধন ও সৌন্দর্য বেড়েছে।  অফিসের ফাইল বাছাই করে বিন্যস্থ করা হয়েছে। ই-সেবা কেন্দ্রের আবেদন প্রতি ঘণ্টায় আনা হচ্ছে এখন। জেলা প্রশাসক ১০০/২০০ কমিটির সভাপতি । প্রতিটি কমিটির রেজুলেশন করতে সময় লাগে। আমি আসার ২৭দিন পরে প্রথম রেজুলেশন করা হয়। তা কমিয়ে পরবর্তী মাসে ৭দিন, তারপর ৩দিন হয়েছে। এখন টার্গেট ১দিনের মধ্যে রেজুলেশন করা। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে তথ্য পাই। তথ্য পেয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। দামুড়হুদা উপজেলার ঈশ্বরচন্দ্রপুরে স্কুলে প্রতিদিন মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। এতে শিশু ঝড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। এখন দামুড়হুদা উপজেলার ২০ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে একটি করে টিফিন বক্স তুলে দেয়া হবে। চাকরিতে অনলাইনে আবেদন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল সিটিজেন চার্টার তৈরি করা হবে। এতে মানুষ উপকৃত হবে।