চুয়াডাঙ্গায় ওষুধ সরবরাহ ও গ্রহণ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

 

ফার্মেসি মালিক ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের দ্বন্দ্ব চরমে : ওষুধ সঙ্কটের আশঙ্কা

 

স্টাফ রিপোর্টার: কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ওষুধ চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গায় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে দন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা। ফলে ফার্মেসি মালিক ও ফারিয়া সমিতি মুখোমুখি অবস্থান করছে। চুয়াডাঙ্গায় ফারিয়ার ওষুধ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। একই সাথে ফার্মেসি মালিকরাও ফারিয়ার সাথে ব্যবসায়িক লেনদেন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ওষুধের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অনেক ফার্মেসি মালিকককে পাশের ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়ে আসতে দেখা গেছে।

ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের সংগঠন ফার্মাসিটিক্যালস্ রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাসোশিয়েশনের চুয়াডাঙ্গা জেলা সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে জানা গেছে, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি নাজমুল হক ২৯ মে সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মুন মেডিকোতে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে যান। মুন মেডিকো ফার্মেসির মালিক ফারুক হোসেনসহ তার লোকজন ফার্মেসি থেকে ওষুধ চুরির অভিযোগ এনে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর তাকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাড়িয়ে নেয়া হয়। এর প্রতিবাদে ফারিয়া ওই দিন থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত কোম্পানির ওষুধ মুন মেডিকোতে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফার্মাসিস্টদের সংগঠন কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা শাখাও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফারিয়ার সাথে অনির্দিষ্টকালের জন্য লেনদেন করবেন না তারা। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দু পক্ষের মধ্যে ওষুধ ও টাকা-পয়সা লেনদেন অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একজন বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, অনেক ফার্মেসির কাছে আমরা টাকা পয়সা পাবো, কিন্তু তারা দিচ্ছেন না। একইসাথে যেসব ওষুধের অর্ডার কাটা হয়েছিলো সে ওষুধও ফার্মেসি মালিকরা গ্রহণ করছেন না এবং নতুন ওষুধের অর্ডারও দিচ্ছেন না। একজন ফার্মেসি মালিক জানান, মঙ্গলবার ওষুধের গাড়ি এসে ফিরে গেলেও আমরা কোনো ওষুধ নিইনি। জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. হারুন অর রশিদ পলাশ বলেন, ‘আলটিমেটাম দিয়েছে সদর উপজেলা কমিটি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফার্মেসি মালিকরা ফারিয়ার কাছ থেকে ওষুধ গ্রহণ ও অর্ডার পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছেন।’ জেলা শহরের আবদুল্লাহ ফার্মেসির মালিক জাকির হোসেন জানান ‘ফারিয়া ও ফার্মেসি মালিকদের দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তারা একই ফার্মেসিতে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ খুঁজে পাচ্ছেন না। এজন্য রোগী সাধারণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’ তিনি জানান, ‘ইতোমধ্যে জেলা শহরের কয়েকটি ফার্মেসিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু ওষুধের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। আজ-কালের মধ্যে দু পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন না হলে জেলায় চরম ওষুধ সঙ্কট দেখা দেবে বলে ফার্মেসি মালিকরা আশঙ্কা করছেন।’