চুয়াডাঙ্গায় আবারো মোটরসাইকেল চুরির হিড়িক : দু দিনের ব্যবধানে দুটি চুরি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল চুরির হিড়িক পড়েছে। দু দিনের ব্যবধানে শহর থেকে দুটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। পুলিশের নজরদারি কমে যাওয়ায় এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে শহরের পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির অফিস থেকেও একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এর আগে মাস দুয়েক আগে একই স্থান থেকে আরও একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় সঙ্ঘবদ্ধ চক্র।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের টাউন ফুটবল মাঠের সামনে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের অফিসের নিচ থেকে একটি বাজাজ ডিসকভার ১০০ সিসি মাল্টিকালারের মোটরসাইকেল চুরি হয়। কোম্পানির খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ও আরটিভির চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান চাঁদ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে অফিসের নিচে মোটরসাইকেলটি রেখে ওপরে যান। ২০ মিনিট পর অফিস থেকে নেমে মোটরসাইকেলটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কামরুজ্জামান চাঁদ চুয়াডাঙ্গা সদর থানার একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন এবং পুলিশ সুপারকে মৌখিকভাবে অবগত করেন। গত রোববার জেলা শহর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছাড়াও গত কয়েকমাসে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় দশটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। যার মধ্যে হোটেল শয়ন বিলাসের নিচে, পৌরসভার মোড়ে, চৌরাস্তার মোড়ে, কোর্ট মোড় এলাকা, হাসপাতাল এলাকাসহ পাড়া মহল্লার ভেতরেও ঘটছে অহরহ চুরির ঘটনা।

বেশ কিছু দিন মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেট ধরার জন্য জেলা পুলিশের অভিযান চলাকালে চুরি কিছুটা কমলেও আবার চোরচক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পুলিশের নজরদারি আগের মতো না থাকায় প্রায় প্রতিনিয়ত ঘটছে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা। আবার এই সিন্ডিকেটের কয়েকজন চিহ্নিত সদস্য প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে অহরহ। মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন কথিত সমাজপতির ছত্রছায়াই চলার কারণেই তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হয় না বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। জেলা শহরের অধিকাংশ মহল্লার দু একজন করে ছেলে সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে রয়েছে। তাদের এই সিন্ডিকেটে মহিলা সদস্য আছে বলে শোনা যায়। চুয়াডাঙ্গার দুটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এ চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। সঙ্ঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্র জেলা শহর থেকে মোটরসাইকেল চুরির পর জীবননগর, দর্শনা, কার্পাসডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, সরোজগঞ্জ এলাকার চিহ্নিত কয়েকটি মোটরসাইকেল গ্যারেজে নিয়ে মোটরসাইকেলর কিছু যন্ত্রপাতি খুলে বিক্রি করে আবার কিছু গাড়ি দুয়েক দিন পর সুযোগ বুঝে অন্য জেলায় পাচার করে বলে জোরগুঞ্জন রয়েছে।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান জানান, জেলায় আবারো মোটরসাইকেল চুরি হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ ছিলো। আমরা মোটরসাইকেল চুরির সাথে জড়িত চিহ্নিত কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছিলাম। তাদের কাছ থেকে উল্লেখ্যযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আমরা জানি তারা এই মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে সোপর্দ করলেও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে তারা বের হয়ে যাওয়ায় এ সিন্ডিকেটকে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সিন্ডিকেটকে নির্মূল করার জন্য জেলা পুলিশ সর্বাত্বক চেষ্টা চালাবে।

পুলিশের নজরদারি বাড়লেই জেলার মোটরসাইকেল চোর এবং চোরের আশ্রয়দাতা অসাধু মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিকদের আইনের আওতায় এনে চুরি রোধ করার দাবি জানিয়েছে জেলাবাসী।