চুয়াডাঙ্গায় অন্তঃসত্ত্বাকালেই সন্তান বিক্রি

ক্লিনিকে সিজারের পরই নবজাতককে সরিয়ে নেয়ায় ঘটনা জানাজানি
স্টাফ রিপোর্টার: শ্যামলি খাতুন যখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখনই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে তার পেটে থাকা সন্তান। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গার ইউনাইটেড ক্লিনিকে সিজার করে সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই যখন ক্রেতার লোকজন নবজাতককে সরিয়ে নেন, তখনই বিষয়টি জানাজানি হয়। প্রথমে শ্যামলি খাতুন তার সন্তান বিক্রির কথা অস্বীকার করলেও পরে বলেছে, দৌলাতদিয়াড় বঙ্গজপাড়ার আল্লাহর দান ফার্মের মালিক হুমায়ুনের মাধ্যমে হাতিকাটার নান্নু তার এক আত্মীয়র জন্য কিনেছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা কলনীর আশরাফুল ইসলাম আশিকুরের স্ত্রী শ্যামলি খাতুনের দেড় বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা শ্যামলির প্রসব বেদনা দেখা দিলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের ইউনাইটেড ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। সকাল ১০টার দিকে সিজার করা হয়। প্রসূতির জ্ঞান ফেরার আগেই তার কোল থেকে নবজাতক পুত্র সন্তানকে সরিয়ে নেয়া হয় অজ্ঞাতস্থানে। কেনো? কারণ জানতে গেলে পাওয়া যায় সন্তান বিক্রির চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে জ্ঞান ফেরার পর প্রসূতি শ্যামলি ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য বলেন, ‘আমার এক বোনের সন্তান হয় না, তাই তাকে আমার সন্তান দেয়া হয়েছে।’ বোনের নাম ঠিকানা কি? শ্যামলি কথা ঘোরাতে শুরু করেন। বোনের নাম ঠিকানা বলতে না পারলে তার পার্শে থাকা কয়েকজন এক পর্যায়ে বলেই ফেলেন শ্যামলি যখন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা তখনই অন্যকে দেয়া হবে বলে অঙ্গীকার করার বদলে চিকিৎসাসহ যাবতীয় খবর নেয়া হয়েছে। সিজার করানো থেকে শুরু করে সব খরচই করেছে ক্রেতা পক্ষে আল্লাহর দান ফার্মেসির মালিক হুমায়ুন।
সন্তুান কেনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হুমায়ুনের সাথে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। শ্যামলি খাতুনের পিতার বাড়ি দৌলাতদিয়াড় বঙ্গজপাড়ায়। স্বামী সম্পর্কে নানাজনের নানা অভিমত। সে মাঝে একবার তার শ্বশুরের গরু পর্যন্ত বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। কিছুদিন শ্যামলিকে নিয়ে স্বামী আশিকুর দৌলাতদিয়াড় বঙ্গজপাড়ায় ভাড়ায় বসবাস করলেও পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের আরামপাড়ার একটি বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছে। গতকাল শ্যামলির সন্তান প্রসবের পর নবজাতককে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়ার পর যখন বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হয়, তখন থেকেই আশিকুর কৌশলে চলাচল করে। সন্ধ্যায় তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন।