চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিরামহীন বৃষ্টি

 স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকের্ড করা হয় ১শ ৩৬ মিলিমিটার। কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। দিন ও রাতে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি কখন ভারী বর্ষণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় বিরামহীন বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না।খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টিরপানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পায়নিষ্কাশন ব্যবস্থায় ময়লা জমে থাকার কারণেই এ দশা বলে মন্তব্য অনেকের।অপরদিকে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে রেললাইনের নিচে মাটি ধসে পড়ায় ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মেরামতের পর পুনরায় শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে রেল লাইনের নিচে মাটি ভরাট ও পুনর্মেরামতের পর ট্রেন যোগোযোগ স্বাভাবিক হয়।এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তে আনালিয়াবাড়িতে রেল লাইনের নিচে মাটি ধসে ছয় থেকে সাত ফুট গর্ত তৈরি হলে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে য়ায়।শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া রংপুরগামী রংপুর আন্তঃনগর এক্সপ্রেসটি ঘটনাস্থলে আটকে পড়ে। এছাড়া রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনে এবং ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনটি টাঙ্গাইল স্টেশনে আটকা পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় দু দিনের টানা বৃষ্টিতে উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় যান চলাচলসহ স্কুলগামী কোমলমতি শিশুরা পড়েছে চরম ভোগান্তির মধ্যে। স্কুলে যাওয়ার পথে কোমলমতি বেশকিছু শিশু পানিতে পড়ে বই-খাতাসহ জামা-কাপড় ভিজিয়ে বাড়িতে ফিরতে দেখা গেছে। মূষলধারে টানা বৃষ্টির কারণে এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ ঘর হতে বের হতে পারেনি। গতকাল শনিবার সারাদিন অধিকাংশ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। ঘর থেকে বের হতে না পারায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হাঁটু পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তাসমূহ মেরামতের জোরদাবি জানিয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগী জনসাধারণ।

এদিকে আবহওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিম বঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মরসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় সামান্য হ্রাস পেতে পারে।গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক শূন্য ও সর্বনিম্ন ২৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তামপত্রা রেকর্ড করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো সৈয়দপুরে ৩১ দশমিক ৪ ও রাঙ্গামাটিতে ২৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।